নওগাঁ জেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নওগাঁ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি নওগাঁ: নওগাঁর আদালতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দুটি মামলা নিয়ে বিভ্রান্তকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ করেছে নওগাঁ জেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নওগাঁ শহরের কেডির মোড় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির সহযোগী ওই তিন সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নওগাঁ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদ হায়দার। লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, ‘গতকাল বুধবার দেশের একটি স্বনামধন্য টেলিভিশন চ্যানেলসহ বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত একটি সংবাদ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। ওই সংবাদে বলা হয়, নওগাঁর আদালতে করা রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির দুটি মামলা থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে খালাস দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ওই দুটি মামলা থেকে তারেক রহমানকে অনেক আগেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একটি মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টার অংশ হিসেবে অতি উৎসাহী হয়ে তারেক রহমানকে অব্যাহতি দিয়ে মামলা দুটি খারিজ হয়েছে বলে কোর্ট চত্বরে মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করে এবং গণমাধ্যমেও এ–সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের ফলে তারেক রহমান ও বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জেলা যুবদলের সদস্যসচিব রুহুল আমিন মুক্তার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম রওশানুল ইসলাম ও যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আজম, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মামুন বিন ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পদ অমিয় সরকার, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন প্রমুখ।

এদিকে গতকাল রাতে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বায়েজিদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির দুটি মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নওগাঁর একটি আদালত থেকে খালাস দেওয়া প্রসঙ্গে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গতকাল বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয় যে বুধবার নওগাঁ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ২০১৪ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা দুটি মামলা খারিজ করে দিয়েছেন। বিষয়টি সঠিক নয়। এ নিয়ে একটি অতি উৎসাহী মহল মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাটি ২০১৫ সালে ও মানহানির মামলাটি ২০২২ সালে খারিজ করে দেন নওগাঁর সংশ্লিষ্ট আমলি আদালত। উল্লিখিত বিষয়ে নওগাঁ জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

নওগাঁ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে খোঁজ নিয়ে বিএনপির এ বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নওগাঁর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপি নেতা তারেক রহমানের কোনো মামলা গতকাল শুনানি কিংবা রায়ের জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যতালিকায় ছিল না। সুতরাং তারেক রহমানের মামলাসংক্রান্ত কোনো শুনানি বা রায় গতকাল আদালত দেয়নি।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে লন্ডনের এক সমাবেশে তারেক রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটূক্তি করে বক্তব্য দিয়েছেন, এমন অভিযোগ তুলে নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি রহমানিয়া আলম ও সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার রায় রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির দুটি মামলা করেন। ওই দুটি মামলা থেকে তারেক রহমানকে অব্যাহতি দিয়ে গতকাল নওগাঁর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামলা দুটি খারিজ করে দিয়েছেন, এমন দাবি করে নওগাঁ আদালত চত্বরে দুপুরে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র নজমুল হক ও তাঁর অনুসারীরা আনন্দমিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।