সাকিব আল হাসান কি অক্টোবরে দেশে ফিরবেন | বিসিবি

ক্রীড়া প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ভারতে অবস্থান করবে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। টি–টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও সফরের শেষ ম্যাচ ১২ অক্টোবর। তবে তত দিন পর্যন্ত ভারতে থাকার দরকার হচ্ছে না সাকিব আল হাসানের। কানপুর সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগে আচমকা ঘোষণায় তিনি নিজেই সেই দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন।

সে দিন টেস্টের পাশাপাশি টি–টোয়েন্টি থেকেও অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব। এর মধ্যে টেস্ট নিয়ে ঘোষণাটি ছিল আগাম, জানিয়েছেন শেষ ম্যাচটি খেলতে চান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দেশের মাটিতে। আর টি–টোয়েন্টির সিদ্ধান্তটি এর মধ্যেই কার্যকর। জুনে হয়ে যাওয়া টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি। যার অর্থ, ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ–ভারত সিরিজের কানপুর টেস্ট শেষ হলেই সাকিবের ভারত সফর শেষ। এরপর সাকিব কী করবেন?

কানপুর টেস্ট শেষে সাকিব চলে যাবেন যুক্তরাষ্ট্রে। আগস্টের মাঝামাঝি সেখান থেকেই পাকিস্তানে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে গিয়েছিলেন। এরপর যুক্তরাজ্যে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে এক ম্যাচ খেলে চলে আসেন ভারতে। এক মাসের বেশি সময় পরিবারের কাছ থেকে দূরে থাকা সাকিব কানপুর টেস্ট শেষ করেই স্ত্রী–সন্তানদের কাছে ফিরে যাবেন। কিন্তু এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলতে আদৌ বাংলাদেশে আসবেন কি না, সেটা এখনো অনিশ্চিত।

শেষ পর্যন্ত যদি দক্ষিণ আফ্রিকা দল বাংলাদেশ সফরে না আসে, অথবা সাকিবই দেশে নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত না হন, তবে কানপুর টেস্টও হয়ে যেতে পারে তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট।

কানপুরে অবসর ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার আসন্ন বাংলাদেশ সফরে মিরপুরে টেস্ট খেলে এই সংস্করণকে বিদায় জানানোর ইচ্ছা তাঁর। সে ক্ষেত্রে দেশে এসে আবার যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা চেয়েছেন তিনি। তবে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছেন, বিসিবি সাকিবকে নিরাপত্তা দিতে পারবে না। বিসিবি কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনী নয়। এটি পুরোপুরি সরকারের হাতে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত না হলে সাকিব হয়তো বাংলাদেশে আসার ঝুঁকে নেবেন না।

অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকাও অক্টোবরে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে দল পাঠানোর বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করেনি। দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে তাদের বাংলাদেশে আসার কথা অক্টোবরে। ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে সরকার পতনের ঘটনার প্রেক্ষাপটে নাগরিকদের জন্য কোনো ভ্রমণ সতর্কতা না দিলেও বাংলাদেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরই মধ্যে তাদের একটি প্রতিনিধিদল দুই সম্ভাব্য ভেন্যু চট্টগ্রাম ও ঢাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে গেছে। তবে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা এখনো চূড়ান্ত কিছু জানায়নি।

শেষ পর্যন্ত যদি দক্ষিণ আফ্রিকা দল বাংলাদেশ সফরে না আসে, অথবা সাকিবই দেশে নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত না হন, তবে কানপুর টেস্টও হয়ে যেতে পারে তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। টেস্ট ম্যাচটি অবশ্য পরপর দুই দিনের মতো বৃষ্টির বাগড়ায় পড়েছে। প্রথম দিনে খেলা হয়েছে ৩৫ ওভার, দ্বিতীয় দিনের পুরোটাই গেছে বৃষ্টির পেটে। কাল তৃতীয় দিনেও আছে বৃষ্টির পূর্বাভাস।

সাদা পোশাক আর লাল বলের ক্রিকেটে সাকিবের শেষটা তাহলে কীভাবে হতে চলেছে? বৃষ্টিবিঘ্নিত কানপুর টেস্ট দিয়েই, নাকি বিদায় বলার সুযোগ পাবেন ঘরের মাঠে?