নাটোর সদরে প্রাণ অ্যাগ্রোর কারখানায় বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি নাটোর: আন্দোলনের মুখে নাটোরে প্রাণ অ্যাগ্রো কোম্পানির কারখানায় (ফ্যাক্টরি) ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রত্যাহার করা হয়েছে কারখানার ব্যবস্থাপক হযরত আলীকে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেতন বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার দাবিতে কারখানা এলাকায় শ্রমিকদের করা বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে এসব ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। কারখানাটিতে পাঁচ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন।
কর্তৃপক্ষ বলেছে, সরকার নির্ধারিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী কোম্পানি বেতন দিচ্ছে। এ ছাড়া জুলাই মাসে শ্রমিকদের ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার সরকারের শ্রম সচিবের সঙ্গে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় বেতনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
প্রাণ অ্যাগ্রো কোম্পানি ও কর্মরত শ্রমিকদের সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে কর্মরত শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন। তারা বেতনবৃদ্ধিসহ ১৩ দফা দাবি করেছিলেন। ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব দাবি পূরণ করার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা আবারও কারখানা এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) হযরত আলীকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মাছুদুর রহমান, পুলিশ সুপার মারুফাত হোসাইন ও দায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তারা কারখানায় যান এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। প্রশাসনের কর্মকর্তারা শ্রমিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষের একাধিকবার আলোচনা করেন। কিন্তু শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করেননি। রাত ৮টার দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় মহাব্যবস্থাপক হযরত আলীকে কারখানা থেকে নিরাপদে বাসায় ফিরিয়ে আনা হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাছুদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা কারখানায় এসেছি। এখানে শ্রমিক এবং প্রাণ কোম্পানির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এখানকার জেনারেল ম্যানেজারকে (ফ্যাক্টরি) প্রত্যাহার করেছে প্রাণ কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের প্রধান দাবি বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে আগামী সপ্তাহে কোম্পানির এমডি ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব।
তিনি বলেন, এর মধ্যে প্রাণ কোম্পানির সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে প্রাণ কর্তৃপক্ষ। আজকের মতো শ্রমিকরা বিক্ষোভ বন্ধ করেছেন। প্রাণ কোম্পানির কারখানা এলাকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে।
প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা বলেন, কারখানার শ্রমিকদের অধিকাংশ দাবি দাওয়া মেনে নেওয়া হয়েছে। শুধু বেতনবৃদ্ধির বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়নি। আমরা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বেতন কাঠামো অনুসারে শ্রমিকদের বেতন প্রদান করছি। আগামী মঙ্গলবার সরকারের শ্রম সচিবের সঙ্গে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় বেতনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মাছুদুর রহমান জানান, মালিক ও শ্রমিক পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার সরকারের শ্রমসচিবের সঙ্গে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সভা হবে। তত দিন কারখানাটি বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে কারখানাটির মহাব্যবস্থাপক হজরত আলীকে প্রত্যাহার করার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়তা দিয়েছেন। কারখানায় অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।