পানিতে ডুবে গেছে কালাই খেত। ছবিটি মঙ্গলবার দুপুরে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: নিম্নচাপের প্রভাবে হওয়া ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে চলতি মাসে ফের পদ্মা নদীতে পানি বেড়েছে। পাঁচ-ছয় দিন ধরে পানি বাড়ায় আতঙ্কিত পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মাপারের মানুষ।

এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে নদীতে পানি বাড়লেও শেষের দিকে কমতে শুরু করে। তবে ফের পানি বাড়ায় বন্যার আশঙ্কায় রয়েছেন নদীঘেঁষা উপজেলার তিন ইউনিয়নে বাসিন্দারা। ইতিমধ্যে চরের বেশ কিছু আবাদি জমির কালাইসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

তবে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগ বলছে, সোমবার পানি বৃদ্ধি পায়, পরে তা স্থিতিশীল থেকে আবার কমতে শুরু করবে। এতে বন্যা হওয়ার কোনো আশঙ্কা দেখছে না তারা।

তাদের দেওয়া তথ্য বলছে, পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে সোমবার সকাল ৬ টা-৯ পর্যন্ত ৩ ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত এখানে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ১২ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার, যা বিপদ সীমার ১ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার নিচে। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।  

উপজেলার সাঁড়া, সাহাপুর ও লক্ষীকুন্ডা—এই দুই ইউনিয়নের পদ্মাপারের মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বন্যায়, ইতিমধ্যে পানিতে তলিয়েছে চরের আবাদি ফসলের মাঠ। এর মধ্যে পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ায় তীরবর্তী মানুষ অসময়ে বন্যার আশঙ্কা করছেন।

লক্ষীকুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ মণ্ডল বলেন, নদীতে পানি কমে গিয়ে আবার বাড়তে শুরু করেছে, তবে ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়নি।

সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বগা বলেন, নদীর আবার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে তা লোকালয়ে এখনো প্রবেশ করেনি। কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকেছে। কয়েক একরের মতো কালাই ডুবে গেছে। অনেক কৃষক পেঁয়াজ চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছিল।

চরে প্লাবিত হওয়া কৃষিজমির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের বিষয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে কয়েক হেক্টর জমির কালাই ডুবে গেছে। এবাব চরে ৩২০ হেক্টর জমিতে কালাই চাষ হয়েছে।

পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে সোমবার সকালে ৯টা পর্যন্ত পানির প্রবাহ ছিল ১২ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার; যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার নিচে। তবে এই পয়েন্টে বিপৎসীমার ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।

তিনি আরও বলেন, আজ বুধবার থেকে পানি স্থিতিশীল থেকে আবার কমতে শুরু করবে। এতে বন্যা হওয়ার কোনো আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে না।