প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় সচিবসভা। আজ বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে | ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাওয়া |
বিশেষ প্রতিবেদক: সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করতে সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুধু সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণই নয়, তা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ (মার্চিং অর্ডার) দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে বলেছেন।
আজ বুধবার সচিবসভার বৈঠকে এসব নির্দেশ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রায় সব সচিবের উপস্থিতিতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই প্রথম সচিবসভা। এর আগে নিজের অধীন থাকা মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা।
আজকের বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন, তার একটি ব্রিফ পাঠিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
ব্রিফে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়নে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত গ্রহণ করতে হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সৃষ্টিশীল ও নাগরিক-বান্ধব মানসিকতা নিয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয়-বিভাগ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কর্মসূচির সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা দাখিল করবে, যা নিয়মিত মূল্যায়ন বা পরিবীক্ষণ করা হবে।
সচিবদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য গৎবাঁধা চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে চিন্তার সংস্কার করে সৃজনশীল উপায়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে সেবা সহজ করার মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি কেনাকাটায় যথার্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা বৈষম্যহীন মানবিক দেশ গড়ার যে প্রত্যয়, যে ভয়হীন চিত্ত উপহার দিয়েছে, তার ওপর দাঁড়িয়ে বিবেক ও ন্যায়বোধে উজ্জীবিত হয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা ও জবাবদিহি নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আগ্রহ, ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, দেশের স্বার্থে তা সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগাতে হবে।