ঈশ্বরদীতে শীতের সবজি বোনার ধুম

শীতের আগাম সবজি রোপণের জন্য জমি তৈরিতে ব্যস্ত এক কৃষক | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: বাংলা পঞ্জিকায় এখন শরৎকাল। শীত আসতে দেরি আরও প্রায় এক মাস। এর মধ্যেই শীতের সবজি বোনার ধুম পড়েছে পাবনার ঈশ্বরদীতে। এই সবজি বাজারেও আসবে শীত শুরুর আগেই।

উপজেলার কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার লক্কীকুন্ডা, সলিমপুর ও সাহাপুর ইউনিয়ন শাকসবজি চাষের প্রধান এলাকা হিসেবে পরিচিত। এখানে ব্যাপকভাবে শিম, গাজর, মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, ঢ্যাঁড়স, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক ও পেঁয়াজের চাষ হয়। এ বছর উপজেলায় ১ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির চাষ হবে। এরমধ্যে চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রায় ৮৯০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের শিম আবাদ হচ্ছে। তবে বেসরকারিভাবে লক্ষ্যমাত্রা আরও বেশি।

উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা মোতমাইন্না জানান, ‘এসব এলাকার চাষিদের বিশেষ নজর থাকে শীতকালীন সবজির দিকে। এখন চাষিরা কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। সাধারণত শীতের সবজি বোনার সময় নভেম্বর মাস। এখানকার চাষিরা আগেভাগে চাষে নেমেছেন, কারণ আগাম সবজি বাজারে নেওয়া গেলে দাম পাওয়া যায় ভালো।’

দাদাপুর, কৈকুন্ডা, পাকুড়িয়া ও বরমপুর এলাকার কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা শীতের সবজির চারা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ কেউ সবজির চারা জমিতে লাগাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ খেত আগাছামুক্ত করতে নিড়ানি দিচ্ছেন। এ সময় বরমপুর এলাকার অনেক চাষির সঙ্গে মো. এনামুল হক (৪৫) নামের এক চাষিকে তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে জমি পরিচর্যা করতে দেখা যায়। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কিছুক্ষণ পর তিনি জমির আইলে উঠে এসে জানান, ‘তাঁর ৬০ শতক জমি রয়েছে। পুরো জমিতেই তিনি বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন শাকসবজি চাষ করছেন। শ্রমিকের মজুরি বেশি, তাই ছেলেদের নিয়ে খেতে নেমে পড়েছেন বিভিন্ন কাজে।’

গাঁওগোয়াইল গ্রামের চাষি মো. রশিদ উদ্দিন (৪২) জানান, ‘তিনি এবার ২৬ শতক জমিতে ফুলকপির চাষ করছেন। শীতের আগে শীতকালীন সবজি বাজারে তোলা হলে তার চাহিদা বেশি থাকে। এর ফলে সেগুলোর দামও বেশি পাওয়া যায়। তিনি আশা করছেন, শীত আসার আগেই তিনি শাকসবজি বাজারে তুলতে পারবেন।’

আরেক চাষি মুহাম্মদ আকরাম আলী (৩৫) জানান, ‘তিনি এবার ৩২ শতক জমিতে বেগুনের চাষ করেছেন। সপ্তাহ খানেক পরেই বেগুন বিক্রি শুরু করতে পারবেন। এখন বাজারে চাহিদার পাশাপাশি দামও বেশি পাওয়া যাবে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে লাখ টাকা আয় করতে পারবে বলে তিনি জানান।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, ‘পরিবেশ ভালো থাকলে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছি। এ লক্ষ্যে আমরা স্থানীয়ভাবে কৃষকদের নানা রকম সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।’