মোস্তফা সরয়ার ফারুকী | ছবি: ফেসবুক আইডি থেকে নেওয়া

বিনোদন প্রতিবেদক: গত ৩ সেপ্টেম্বর মেয়ে সন্তানের বাবা হয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদ। সে তথ্য জানান, শনিবার ফেসবুকে নবজাতকের ছবি পোস্ট করে মেয়ের জন্য দোয়া চান। এদিন রাতেই তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।

২০১৪ সাল থেকেই মাসুদ ছিলেন পঙ্গু। ওই বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের সামনে তার ওপর হামলা হয়। এ সময় মাসুদের ডান পায়ের নিচের অংশ গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। বাঁ পা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই হামলায় পা হারিয়ে মাসুদ একটি প্লাস্টিকের পা লাগিয়ে চলাচল করতেন। এদিন রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজার থেকে ওষুধ নিয়ে ফেরার সময় তাকে পিটিয়ে থানায় দেওয়া হয়, এরপর হাসপাতালে নিলে তিনি মারা যান। 

শনিবার নির্বিচারে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মাসুদকে মেরে ফেলার ঘটনা দেশব্যাপী সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে বর্তমান আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। সবাই প্রশ্ন রাখছেন, সদ্য বাবা হওয়া মাসুদ অন্যায় করে থাকলে তাকে বিচারের মুখোমুখি না করে কারা এভাবে মেরে ফেললো?

 

বিচারবহির্ভূত হত্যার এই ঘটনায় মর্মাহত সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষেরাও। দেশের মেধাবী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এই ঘটনায় লিখেছেন,“রাজশাহীর ঘটনাটা মনটা দুমড়ে মুচড়ে দিলো। ছোট বাচ্চাটার দিকে কি আমরা তাকাতে পারবো? যদি তার বাবা অপরাধ করেও থাকে কে মবকে লাইসেন্স দিলো বিচার করার?”

বর্তমান প্রশাসনের উদ্দেশে ফারুকী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন,“মবরাজ থামান। শৃংখলা আনেন। না হলে কোনো সংস্কার কাজে আসবে না।”

নির্মাতা বলেন,“আমি জানি, পুলিশ বাহিনীকে দুর্বল করে দেয়া হইছে। কিন্তু এর সমাধানের পথে তো হাঁটতে হবে। সবাই ঐক্য ধরে রেখে মববাজি থামাতে হবে। পুলিশকে আরো কনফিডেন্স দিয়ে এঙ্গেজ করতে হবে। বিপ্লবের কৃতিত্ব কার, কে ক্রিম খাবে, কাকে ঠেকায়া কাকে উঠাতে হবে এটা পরেও করা যাবে। এখন এইটা নিয়া বিজি থাকলে বিশৃংখলাই কেবল বাড়বে। ফ্যাসিস্ট শক্তি এটাই চায়। এখন ভাবেন তার চাওয়া পূরণ করবেন নাকি ইফেকটিভ সরকার কায়েম করবেন। প্লিজ।”

শনিবার বিকেল চলচ্চিত্রের এই নির্মাতা বলেন, “আপনারা যারা এসব করতেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলি, এইসবের মধ্য দিয়ে আপনারা যে ভয়ানক অপরাধই করছেন তা না, একই সাথে দেখেন আপনারা সবাইকে কোন আলাপে ব্যস্ত করে দিতেছেন? অথচ আমাদের আলাপ হওয়ার কথা ছিলো ফ্যাসিস্ট শক্তির অপকর্মের শ্বেতপত্র, রিফর্ম, এবং জনগনের অংশগ্রহণে একটা কার্যকর গণতন্ত্র!”