খাগড়াছড়িতে সহিংসতায় বিধ্বস্ত বাড়িঘর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিজস্ব প্রতিবেদক: খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সহিংসতায় হতাহতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে সাত কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, উত্তপ্ত পাহাড়ে শান্তি ফিরতে শুরু করেছে, তবে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে এখনো আতঙ্ক কাটেনি। খাগড়াছড়িতে শান্তি ফেরাতে প্রশাসনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে স্থানীয়দের মধ্যে একাধিক বৈঠক করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় প্রশাসন আরও জানিয়েছে, খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালায় সাম্প্রতিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিন জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছেন। দুর্বৃত্তরা ৮৭টি স্থায়ী এবং সড়কের পাশে থাকা ৯৪টি ভ্রাম্যমাণ দোকান পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া ২৬টি দোকানের মালামাল লুটপাট করা হয়েছে। গণপরিবহনেও অগ্নিসংযোগ করা হয়—যার মধ্যে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, সিএনজি, মোটরসাইকেলসহ ২০টি যানবাহন রয়েছে। ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার ২৬টি দোকানের মধ্যে বাঙালিদের ৩০টি এবং পাহাড়িদের ৫৭টি দোকান রয়েছে।
লুটপাট হওয়া তারেং মোবাইল দোকানের মালিক কুসুম চাকমা বলেন, 'দুর্বৃত্তরা আমার দোকানে ভাঙচুর চালিয়ে মোবাইল ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী লুট করেছে।'
দীঘিনালা উপজেলার লারমা স্কয়ার এবং বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে সহিংসতার দগদগে চিহ্ন। দোকানপাটের মালামাল ভস্মীভূত অবস্থায় পড়ে আছে।
কয়েকদিন আগেও যেখানে দোকানগুলো ছিল সাজানো-গোছানো, ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখর, এখন সেখানে নেমেছে বিষাদের ছায়া। কিছু দোকানের মালিক নতুন করে অবকাঠামো তৈরি করছেন। অনেকে হতাশার মধ্যে রয়েছেন, তাদের ধারদেনার জালে নতুন করে শুরু করার উপায় নেই। আগের ঋণ কীভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়েও অনেকে দুশ্চিন্তায় আছেন। লারমা স্কয়ার এবং বাস টার্মিনালে পাহাড়ি-বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের লোকজন ব্যবসা করতেন।
বোয়ালখালী বাস টার্মিনালের পাহাড়িকা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক দিপন চাকমা জানান, 'সদ্য তৈরি করা দোকানটিতে সব মালামাল ছিল পরিপূর্ণ। সেটিই ছিল একমাত্র আয়ের উৎস। সহিংসতায় দোকান পুড়ে অন্তত ৪০-৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সহায়-সম্বল হারিয়ে এখন নিঃস্ব। কীভাবে পরিবার চালাবো, সে চিন্তায় আছি।'