চেক প্রজাতন্ত্রে ভারী বৃষ্টির কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে। জার্মানি, পোল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ায় এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে | ছবি: এএফপি

পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক: চেক প্রজাতন্ত্রে ভারী বৃষ্টির প্রভাবে প্রতিবেশী পোল্যান্ড, জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও স্লোভাকিয়ায় বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বাভারিয়ান আল্পস–সংলগ্ন এলাকায় বছরের প্রথম ভারী তুষারপাতের আশঙ্কা রয়েছে।

পোল্যান্ড, জার্মানি, চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভাকিয়া ও অস্ট্রিয়ার কিছু অংশে ভারী বৃষ্টির কারণে মধ্য ইউরোপের বড় এই অংশটিতে সপ্তাহান্তে সম্ভাব্য বন্যার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

স্থানীয় আবহাওয়া কেন্দ্রগুলোর পূর্বাভাস অনুসারে, মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পোলিশ-চেক সীমান্তের পার্বত্য অঞ্চলে ৪০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আশপাশের অঞ্চল ও শহরগুলো প্লাবিত হতে পারে।

পোলিশ কর্তৃপক্ষ লোয়ার সিলেসিয়া, ওপোল ও সিলেসিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সর্বোচ্চ আবহাওয়া সতর্কতা জারি করেছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় রোক্লো শহরের মেয়র একটি জরুরি কমিটি গঠন করেছেন। ১৯৯৭ সালে রোক্লো শহরের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছিল।

পোলিশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শুক্রবার থেকে রোববারের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

চেক প্রজাতন্ত্রে ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টির শঙ্কা
এদিকে চেক প্রজাতন্ত্রের আবহাওয়া অধিদপ্তর এক সতর্ক বার্তায় বলেছে, দেশটির পূর্বাঞ্চল মোভারিয়াতে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে। বন্যার পানি থেকে শহরগুলো রক্ষার জন্য বালুর বস্তা ও বন্যা নিয়ন্ত্রক বাঁধ তৈরি করা হচ্ছে।

দেশটির পরিবেশমন্ত্রী পেটার হ্লাডিক এই পরিস্থিতিকে অতীতের বন্যাগুলোর সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যেমনটা আমরা ১৯৯৭ ও ২০০২ সালে বন্যা দেখেছিলাম। যে বন্যায় অনেকের প্রাণহানিসহ কোটি কোটি ইউরোর ক্ষতিসাধন হয়।’

২০০২-এর বন্যার প্রভাব পড়েছিল পার্শ্ববর্তী শহর জার্মানির ড্রেসডেনে। সে সময় এলবে নদীর ওপর থাকা সেতুটি ভেঙে যায়।

চেক প্রজাতন্ত্রের দক্ষিণ ও পূর্ব সীমান্তজুড়ে অস্ট্রিয়া ও স্লোভাকিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের বিভিন্ন নির্ধারিত অনুষ্ঠান বাতিল করেছে। জরুরি পরিষেবাগুলোকে সহায়তা প্রদানের জন্য সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টির ফলে দানিউব নদীর পানির স্তর গত ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠতে পারে।

স্লোভাক ফায়ার ব্রিগেডের প্রধান অ্যাড্রিয়ান মিফকোভিচ পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ক্ষণস্থায়ী বাঁধ স্থাপনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান। পাশাপাশি স্লোভাক সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।

এদিকে দক্ষিণ জার্মানির বাভারিয়ান আল্পস অঞ্চলের কিছু স্থানে ৬০ থেকে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।

জার্মান আবহাওয়া পরিষেবা (ডিডব্লিউডি) বছরের প্রথম ভারী তুষারপাতের পূর্বাভাস দিচ্ছে। ৫০ সেন্টিমিটার বা প্রায় ২০ ইঞ্চি পরিমাণ ভারী তুষারপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।