এই প্রতিনিধি বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন পশুর খামারিদের মাথায় হাত | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফেনী সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়ার ‘মরিয়ম ডেইরি’ বেশ ভালোই চলছিল। ৪০টি গরু আর ২২টি ছাগল ছিল তার খামারে। অগাস্টের বন্যা তার সর্বনাশ করে দিয়ে গেছে।

বন্যার শুরুতে যখন খামারে পানি উঠে গেল, কিছু গরু-ছাগল অন্য জায়গায় সরাতে পেরেছিলেন জাহাঙ্গীর। কিন্তু পানিবন্দি অবস্থায় গো-খাদ্যের দারুণ সংকট দেখা যায়। কিছু গরু ও ছাগল রোগে আক্রান্ত হয়, বন্যার মধ্যে সঠিক চিকিৎসাও করানো যায়নি।

কাজিরবাগ ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর বলেন, 'বন্যার মধ্যেই আমার নয়টা গরু, চারটা ছাগল মারা গেছে। নয়টা গরুর মধ্যে ছয়টাই গাভীন (সন্তানসম্ভবা) ছিল। দুইটা ছিল বাছুর। শনিবারও একটা গরু মারা গেছে।'

বাকি গরুগুলো নিয়েও চিন্তিত জানিয়ে তিনি বলেন, 'ভাই, আমার অনেক টাকা ক্ষতি হয়ে গেছে।'

বন্যায় ক্ষতি মুখে পড়েছেন উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের খামারি আরিফ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিনও। তার খামারের ১৫টি গরুর মধ্যে ছয়টি এরই মধ্যে মারা গেছে। পানিতে ভেসে গেছে চারটি গরু, আর পানি নামার পর রোগে ভুগে মারা গেছে আরও দুটি।

আরিফের খামারের নাম ‘আলাই অ্যাগ্রো ফার্ম’। ফতেহপুর ও দেবীপুরের মাঝামাঝি ফতেহপুর ফ্লাইওভারের পশ্চিমে পাশে তার খামারের অবস্থান।

খামারি আরিফ আফসোস করে বলছিলেন, মারা যাওয়া গরুগুলোর মধ্যে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভী এবং তার বাচ্চাও ছিল। দুটি ছিল ষাঁড়। বন্যায় খামারের ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

জাহাঙ্গীর ও আরিফের মত হাজার হাজার খামারি বন্যার কারণে প্রচণ্ড ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অনেকে স্বপ্ন নিয়ে বিনিয়োগ করলেও তাদের সেই স্বপ্ন বন্যায় ভেসে গেছে। তারওপর ঘাড়ের ওপর পড়েছে ঋণের চাপ। খামার থেকে আয় না আসায় কীভাবে সেই ঋণ পরিশোধ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন খামারিরা।

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় দেশের পূর্বাঞ্চলের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে অন্য দুই জেলার তুলনায় ফেনীর ক্ষতি অনেক বেশি।

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ফেনীতে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে দিনযাপন করেছেন। গ্রামীণ জনপদ থেকে এখনো সব পানি নামেনি। বন্যার এই ভয়াবহতার কারণেই সারাদেশ থেকে যত ত্রাণ গেছে তার বড় অংশ গেছে ফেনীর বানভাসি মানুষের জন্য।

ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালী- এই তিন জেলায় প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিন জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ৫৬ হাজার ৩৪৯টি গরু-মহিষ ও ছাগল-ভেড়া মারা গেছে।

এর মধ্যে শুধু ফেনীতের মারা গেছে ৫৫ হাজার ২৫৪টি পশু। জেলায় গরু মারা গেছে ৩৮ হাজার ৭৩১টি, মহিষ মারা গেছে ৩৫৯টি। এ ছাড়া ১৫ হাজার ৫৫৮টি ছাগল ও ৬০৬টি ভেড়া মারা গেছে। এতে মোট ১৬ কোটি ৬৯ লাখ ৩৮ হাজার ২০০ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

নোয়াখালীতে মারা গেছে ১৬৭টি গরু, ৭৯টি মহিষ, ২০৯টি ছাগল ও ৪২৭টি ভেড়া। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তিন কোটি ৬২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। কুমিল্লায় ৩৫টি গরু, তিনটি মহিষ, ১৭১টি ছাগল এবং সাতটি ভেড়া মারা গেছে।

‘গরু বাঁচাতে গিয়ে ভেসে যান ইউসুফ’
জাহাঙ্গীর ও আরিফের মত ফেনী সদর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের আব্দুল হাই, ফতেহপুর গ্রামের মোশারফ হোসেনসহ সদরে প্রায় কয়েক শতাধিক খামারির গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে।

সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম খোকন বলেন, 'সদর উপজেলায় বন্যার কবলে পড়ে ৩৮ হাজার ৩৫০টি গরু। যার মধ্যে রোববার দুপুর পর্যন্ত মারা যায় ২৫ হাজার ৯৩৭টি। এ সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। সদরে আক্রান্ত ৫৬টি মহিষের মধ্যে ১১টির মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ১৬ হাজার ৭৮টি ছাগলের মধ্যে ৯ হাজার ৬৪৭টি মারা গেছে। আক্রান্ত শতাধিক ভেড়ার মধ্যে ৬০টির মৃত্যু হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'বন্যার পানি নেমে গেলেও পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিনিয়ত গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। যার সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এটা আতঙ্কের। আমরা খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।'

সদরের পর বেশি ক্ষতি হয়েছে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায়। ফুলগাজীতে শুধু গরুর মৃত্যু হয়েছে সাত হাজার আর পরশুরামে তিন হাজার ২২৮টি। 

ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের সাবেক সদস্য শহীদ সাংবাদিকদের বলেন, 'দরবারপুর গ্রামের মোহাম্মদ ইউসুফের চারটি গরু ছিল। বন্যার পানি বাড়তে শুরু করলে তিনি বাড়ি থেকে তিনটি গরুকে একটু উঁচু জায়গায় নিয়ে রাখতে পারেন। চতুর্থ গরুটি নিতে এসে দেখেন পানি অনেক বেড়ে গেছে।'

তখন প্রচণ্ড স্রোত ছিল। একটি গরু স্রোতে ভেসে যায়। গরুগুলোই ছিল তার বেঁছে থাকার সম্বল। একটি গরু ভেসে যাচ্ছে দেখে তিনি স্থির থাকতে পারেননি। গরু বাঁচাতে গিয়ে তিনিও সাঁতার দেন কিন্তু আর ফিরতে পারেননি। বানের পানিতে ভেসে যান।

চারদিন পর ইউসুফের মরদেহ ভাটি থেকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান সাবেক ইউপি সদস্য শহীদ।

ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের জামিলা আক্তার বলছিলেন, 'বন্যায় নিজে ও পরিবার বাঁচলেও দুটি গরুকে তিনি বাঁচাতে পারেননি। বন্যার পানি হু হু করে বাড়তে থাকলে তিনি স্থানীয় একটি মাদরাসায় এসে আশ্রয় নেন। কিন্তু পানি বেশি থাকার কারণে গরুগুলোকে বাড়ি থেকে বের করতে পারেননি। পানিতেই গরুগুলো মারা পড়েছে।'

একই ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের উত্তর পালপাড়ার আলম মিয়া জানান, 'বন্যার পানি বাড়তে থাকলে তিনি একমাত্র গরুটিকে বাড়ির পাশে একটি বিল্ডিংয়ে বেঁধে আসেন। আর নিজে পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান। পানি নামার পর আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে দেখেন গরুটি সেখানেই মরে পড়ে আছে।'

ফেনী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, 'ছয় উপজেলায় বন্যার কবলে পড়েছিল ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩৮৮ গরু। ক্ষতিগ্রস্ত খামারের সংখ্যা তিন হাজার ২২টি।'

তিনি বলেন, 'যেসব গবাদিপশু বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে তাদের জরুরিভাবে চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন নেওয়া প্রয়োজন। প্রানিসম্পদ বিভাগ সব খামারির খোঁজ-খবর নিচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে।' 

১০ গরু হারিয়ে নাজমার চিন্তা ঋণ নিয়ে
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাসপুর গ্রামের নাজমা আক্তার পরিবারের হাল ধরতে গরুর খামার করেছিলেন। প্রথমদিকে ভালো লাভ পাওয়ায় পরে ঋণ করে খামার বড় করেন। তার খামারে অর্ধশতাধিক গরু ছিল। বন্যার পানি সেই খামারে উঠে যায়। প্রায় ২০ দিন খামারের মধ্যে তিন ফুট পানি ছিল।

নাজমা বলছিলেন, “এতে দশটি গরু মারা গেছে, ক্ষতি হয়েছে ১০ লক্ষাধিক টাকার। ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে খামার বড় করেছিলাম। এখন সেই টাকা শোধ করা নিয়ে খুব চিন্তায় পড়ে গেছি। আমার জন্য খুব কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।”

সরকারি সহায়তা চেয়ে তিনি বলেন, “এই অবস্থায় সরকার যদি পাশে না দাঁড়ায় তাহলে তো খামারটি বন্ধ হয়ে যাবে।”

একই রকম ক্ষতির কথা বলছিলেন সুবর্ণচর উপজেলার আল আমিন বাজার এলাকার গরু খামারি মামুন চৌধুরী। তার খামারে শতাধিক গরু ও অর্ধশত ছাগল ছিল। এর মধ্যে একটি গরু ও চারটি ছাগল মারা গেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, নোয়াখালীতে গবাদিপশুর খামার আছে দুই হাজার ৬২১টি। এগুলোতে গবাদি পশু ছিল ৯৮ হাজার ২৪৪টি। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ও আক্রান্ত গরুর সংখ্যা ৬৯ হাজার ৩৭৭টি, মহিষ তিন হাজার ৭০১টি, ভেড়া সাত হাজার ১১৭টি, ছাগল ২৭ হাজার ৪০৭টি।

মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে ভেড়া; মোট ৪২৭টি মারা গেছে। এ ছাড়া গরু মারা গেছে ১৬৭টি, মহিষ ৭৯টি ও ছাগল ২০৯টি। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩ কোটি ৬২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।

পশুপাখির দানাদার খাবার নষ্ট হয়েছে ৫৯৯ দশমিক ৬৭ টন। ক্ষতি এক কোটি ৫৫ লাখ তিন হাজার টাকা। নষ্ট হওয়া খড়ের পরিমাণ দুই হাজার ৪৮৯ টন; যার দাম এক কোটি ৮৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা। নষ্ট ঘাসের পরিমাণ তিন হাজার ২৯৭ টন, ক্ষতি হয়েছে এক কোটি ৯৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকার।

আবুল কালাম বলেন, “এখনও অনেক উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের খামারগুলো পানিতে ডুবে আছে, সেগুলো পরিদর্শন করাই সম্ভব হচ্ছে না। পানি কমার পর সব খামারের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সহায়তার বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।”

‘প্লেগে’ আক্রান্ত ছাগল
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার হাজিপুর গ্রামে গত চারদিনে গোলাম মাওলার চারটি ছাগল মারা গেছে। এই সময়ে তার ভাই আলাউদ্দিনের আটটি ছাগল মারা গেছে।

গোলাম মওলা ও আলাউদ্দিন জানালেন, বন্যার পর ছাগল অসুস্থ হলে তারা পশু চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন, ছাগলগুলো পিপিআর রোগে আক্রান্ত।

তাদের আরো ১২টি ছাগল পিপিআর রোগে আক্রান্ত হয়ে আছে বলে জানালেন দুই ভাই।

সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. এহতেশামুল হক বলেন, 'বন্যার পানি নামার পর থেকে সুবর্ণচরে ছাগল বেড়ার মধ্যে ভাইরাসজনিত রোগ পিপিআর ছড়িয়ে পড়ে। এতে সুবর্ণচরে ৭০ ভাগ ছাগল ও ভেড়া আক্রান্ত হয়েছে। শতকরা ৮০ ভাগ প্রাণীই মারা যাচ্ছে।'

পশু চিকিৎসক বলেন, 'এ রোগ থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় হচ্ছে আগে থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া।'

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, 'পিপিআর গবাদিপশু ছাগল, ভেড়ার একটি মারাত্মক ভাইরাসজনিত রোগ। একে ছাগলের ‘প্লেগ’ও বলা হয়। এ রোগের লক্ষণ হচ্ছে, আক্রান্ত ছাগল ও ভেড়ার নাক-মুখ থেকে তরল নির্গত হতে থাকে। রক্তমিশ্রিত ও দুর্গন্ধযুক্ত পাতলা পায়খানা করে।গবাদিপশুর শরীরে ১০৫-১০৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্র ছাড়াও আক্রান্ত মুখে ঘা দেখা দেয়। ফলে খাবারে অরুচি তৈরি হয়। এ রোগে আক্রান্ত ছাগল-ভেড়ার মৃত্যু হার ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ।' 

গরু-মহিষের খাবারের জন্য ক্যাম্পাস উন্মুক্ত
বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নোয়াখালীর কৃষকরা। বন্যায় চারণভূমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পশুর খাবার দিতে পারছেন না। খড় সংগ্রহ করাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গবাদিপশুর আশ্রয় ও খাবারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

সেখানে খামারিরা তাদের গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়াগুলো নিরাপদে রাখতে পারছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠসহ বিভিন্ন উঁচু জায়গায় জন্মানো প্রাকৃতিক খাস গবাদি পশুরগুলোর খাবার জোগান দিচ্ছে।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার সহকারী রেজিষ্ট্রার আব্দুল হাকিম বলেন, 'বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের কোথাও শুকনো জায়গা নেই, কোথাও ঘাসের দেখা নেই। শুকনো খড়ের যোগান নেই। অনেকের বাড়িতে খরের স্তূপ থাকলেও বন্যা আক্রান্ত হওয়ায় পর্যাপ্ত খড় সরানো যায়নি। তাই আমাদের ক্যাম্পাস খামারিদের সহায়তার জন্য এ সিদ্ধান্ত দিয়েছে।'

কুমিল্লায় চার হাজার খামারি ক্ষতিগ্রস্ত
কুমিল্লা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, 'জেলায় চার হাজারের বেশি গবাদিপশুর খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দুই লাখ নয় হাজার বিভিন্ন জাতের গবাদিপশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে গরুর সংখ্যা এক লাখ ২০ হাজার, ১৬টি মহিষ, ৩০ হাজার ছাগল, ৭০০ ভেড়া। তার মধ্যে মারা গেছে ৩৫টি গরু, তিনটি মহিষ, ১৭১টি ছাগল এবং সাতটি ভেড়া।'

তিনি বলেন, 'এসবেব বাইরে দুই হাজার ২১৮টি খামারে ১৩ লাখ ৬৬ হাজার হাঁস-মুরগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারা গেছে ১০ লাখ ২২ হাজার মুরগি এবং ২ হাজারের বেশি হাঁস। এটি চূড়ান্ত তালিকা নয়। প্রাথমিকভাবে তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।'

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, 'বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের সব ধরনের সহযোগিতা করছি।'