প্রতিনিধি রাজশাহী: আগের ঘোষিত রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী অঞ্চলের নার্সিং কলেজের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও কলেজ পরিদর্শকের দপ্তরের কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন।
এর আগে সকালে তাঁরা ওই এলাকায় দাবির পক্ষে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তাঁদের গলায় প্রতীকী ফাঁসির রশি ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে। এর আগে গতকাল বুধবারও একই দাবিতে তাঁরা কর্মসূচি পালন করেন। গতকাল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান করেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁদের ক্লাস ও মধ্যবর্তী পরীক্ষাগুলো অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কয়েক মাস ধরে তাঁরা পরীক্ষার অপেক্ষায় আছেন। গত ৩ জুলাই তাঁরা অনশন করে পরীক্ষার রুটিন পেয়েছিলেন। সে অনুযায়ী, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১ সেপ্টেম্বর রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ জেড এম মোস্তাক হোসেন অনিবার্য কারণ উল্লেখ করে পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেন। পরে তিনি পদত্যাগও করেছেন। এ ছাড়া পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও পদত্যাগ করেছেন। এর পর থেকে শিক্ষার্থীরা আবার সেশন জটের আশঙ্কার মধ্যে পড়ে যান।
রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২৩টি নার্সিং কলেজ রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন পরিচালিত হয়। এসবের মধ্যে চারটি সরকারি নার্সিং কলেজ আছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের একই শিক্ষাবর্ষের (২০১৯-২০) শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা ও ফলাফল না পেলে তাঁরা ছয় মাসের ইন্টার্নশিপ করতে পারবেন না। আর এটি ছাড়া আগামী বছরের মার্চে নার্সিং নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না তাঁরা। তাই সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পরীক্ষা ও ফল প্রকাশ করা প্রয়োজন।
আন্দোলনকারী রংপুর নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী মো. রায়হান আলী বলেন, গতকাল আন্দোলনের একপর্যায়ে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা আসেন। তাঁদের কয়েকজন সদস্য রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মহিনুল হাসানের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে কথা বলার আশ্বাস দেন। পরে তাঁরা বিকেল পাঁচটার দিকে গতকালের মতো কর্মসূচি শেষ করেন।
মো. রায়হান আলী আরও বলেন, তাঁদের পরীক্ষা হোক এটা অনেকেই চান না। তাঁদের নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এ ছাড়া এই কর্মকর্তাদের পদত্যাগও দাবি করবেন। পরীক্ষা নেওয়ার লিখিত আশ্বাস না পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না। তাঁদের চাওয়া, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দ্রুত তাঁদের পরীক্ষা নেওয়া হোক।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ খন্দকার মো. ফয়সল আলম বলেন,
রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুতই একজন উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে কথা
হচ্ছে। আশা করছেন, এই পরিস্থিতির দ্রুত অবসান হবে। তিনিও ছাত্রদের
পরিস্থিতির কথা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জানাচ্ছেন। হয়তো শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা
দু-চার দিন পেছাতে পারে।