ঈশ্বরদীতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে ইমামকে মারধর

মারধর | প্রতীকী ছবি

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদীতে মসজিদ, মাদ্রাসা, ইদগাহ ও গোরস্থানের কমিটি গঠন নিয়ে ইমামকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শুক্রবার দিয়ারসাহাপুর ও চরসাহাপুর মসজিদে এই ঘটনা ঘটে।

মসজিদের ইমাম ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, জুমার নামাজের খুতবা দেওয়ার সময় আলমগীর হোসেন বাদশা নামের এক ব্যক্তি মসজিদে ঢুকে ইমামের কাছে থেকে মাইক কেড়ে নেয়। পরে এই এলাকার মসজিদ, দিয়ারসাহাপুর ও চরসাহাপুর কওমি মাদ্রাসা, ইদগাহ ও গোরস্থানের বর্তমান কমিটি বাতিল করে স্থানীয় বিএনপি নেতা দুলাল সরদার নাম সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন। এসময় ইমাম, কয়েকজন মুসল্লি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সাজেদুল ইসলাম এটির প্রতিবাদ করলে তাঁদের মসজিদের মধ্যেই মারপিট করেন বাদশাসহ তার সঙ্গে থাকা লোকজন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি থেকে মারামারি শুরু হয়। এক পর্যায়ে খুতবা ও জুম্মার নামাজ পণ্ড হয়ে যায়।

এদিকে মসজিদ, ইদগাহ ও গোরস্থানের সঙ্গে আশরাফুল উলুম কওমি মাদ্রাসার একত্রিত কমিটি হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের মুহতামিম মো. এনামুল হক মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের ছুটি দেন। ওই দিনের পর থেকে মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, চরসাহাপুর এলাকার এসব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সভাপতি জুলমত হায়দার ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন তৌফিকুজ্জামান রতন মহলদার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৌফিকুজ্জামান রতন মহলদার বলেন, ‘সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে ঈশ্বরদীর বাইরে অবস্থান করছি, শুনেছি কমিটি নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে, এর বেশি কিছু জানিনা।’

মাদরাসার মুহতামিম মো. এনামুল হক বলেন, ‘ছোট ছোট শিশুরা এই পরিস্থিতিতে মাদ্রাসায় আসতে ভয় পাচ্ছে এ কারণে পরিস্থিতি বিবেচনা করে মাদ্রাসা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি।’

ইউপি সদস্য সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদের মধ্যে জুমার নামাজের খুতবা পাঠ করার সময় ইমামের কাছে থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে তাঁকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে শান্ত থাকতে এবং সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি করার প্রস্তাব করায় আমাকেও মসজিদের মধ্যে মারধর করা হয়েছে।’

বক্তব্য জানার জন্য মুঠোফোনে কল দিলে আমিনুল সরদার জানান, ‘এতদিন এসব প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতারা দায়িত্ব পালন করেছেন, এখন রাজনৈতিক ও সামাজিক পটভূমি পরিবর্তন হাওয়ায় তাঁরা (আওয়ামী লীগের নেতারা) সবাই আত্মগোপনে চলে যান। এ কারণে আমরা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির দুলালের নাম ঘোষণা করি। ইমাম বা ইউপি সদস্যকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা আমার জানা নেই।’

হুমায়ুন কবির দুলাল বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমার সমর্থনে সভাপতি হিসেবে কেউ আমার নাম প্রস্তাব করতে পারে?’

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ বলেন, 'লোকমুখে ঘটনাটি শুনেছি। এখনো কেউ লিখিত কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে নিয়ম অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'