সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে অভিভাষণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্নীতি প্রতিরোধে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কোনও প্রতিষ্ঠানের প্রধান, তথা জেলা জজ, কিংবা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক যদি ব্যর্থ হন, তবে সেটাকে তার পেশাগত অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

শনিবার সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে সারা দেশের প্রায় দুই হাজার বিচারকের উপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি এ মন্তব্য করেন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং বিচার বিভাগে দুর্নীতি বন্ধ করতে আমি বদ্ধপরিকর। আজ আমি এই মঞ্চ থেকে বিচার বিভাগে যেকোনও ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করছি। আমাদের মনে রাখতে হবে, ব্যক্তি পর্যায়ে একজন বিচারকের দুর্নীতি সমগ্র বিচার বিভাগের ওপরেই কালিমা লেপন করে। এমনকি আদালতের একজন সহায়ক কর্মচারী কিংবা আইনজীবীর সহকারীও যদি দুর্নীতি করেন, সাধারণ জনগণ সাদা চোখে সেটিকে বিচার বিভাগের অবক্ষয় হিসেবেই গণ্য করে। তাই বিচারাঙ্গন থেকে যেকোনও ধরনের দুর্নীতি বিলোপ করতে হবে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসার বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া, আমাদের উচ্চ আদালত সম্পর্কেও বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। অনেক সময়েই সুপ্রিম কোর্টের এফিডেভিট শাখা, ডেসপাস শাখা, নকল শাখার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে নেতিবাচক খবর আমার কানে আসে। আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করতে চাই— এ ধরনের কোনও অনিয়ম আর বরদাস্ত করা হবে না। ইতোমধ্যে আমি সুপ্রিম কোর্টে উন্নত সেবা প্রদান ও অনিয়ম দূর করতে ১২ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছি, যার বাস্তবায়ন অত্যন্ত কঠোরভাবে মনিটর করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফৌজদারি মামলার তদন্ত কাজ যেন দীর্ঘ দিন ঝুলে না থাকে, পুলিশকে সে ব্যাপারে আন্তরিক হতে হবে। আমরা দেখেছি, চাঞ্চল্যকর সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের জন্য ইতোমধ্যে ১১১ বার সময় নেওয়া হয়েছে। এটা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। তদন্ত কাজেই যদি একাধিক বছর সময় লেগে যায়, সে মামলার বিচারকাজ পরিচালনা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। কেননা, সময়ের আবর্তে মামলার অনেক সাক্ষী ও সাক্ষ্য হারিয়ে যায়।’

এর আগে অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এসময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সারা দেশের অধস্তন আদালতের প্রায় ২ হাজার বিচারক, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিটির প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।