বন্যার্তদের জন্য রাজশাহীতে ত্রাণ সংগ্রহ, সহায়তা করছেন সব শ্রেণি–পেশার মানুষ

রাজশাহী নগরের অলকার মোড়ে বন্যার্তদের সহযোগিতা খোলা বুথে সহায়তা করছেন নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহী নগরের অলকার মোড়ে বন্যার্তদের সহযোগিতার জন্য একটি বুথ খোলা হয়েছে। সব শ্রেণি–পেশার মানুষ সেখানে সাধ্যমতো সহায়তা করছেন। ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীর পাশাপাশি সহায়তা করছেন ক্ষুদ্র আয়ের শ্রমিকও। আজ শনিবার সকালে বুথে গিয়ে দেখা যায়, কাদামাটি হাতে মাখানো এক ব্যক্তি ২০০ টাকার নোট দিয়ে ১০০ টাকা ফেরত নিচ্ছেন। কথা বলে জানা গেল তিনি একজন শ্রমিক।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থেকে রাজশাহী শহরে কাজে এসেছেন। তাঁর নাম আবদুস সালাম (৩২)। তিনি জানান, তাঁর প্রতিদিনের পারিশ্রমিক ৫০০ টাকা। এই টাকা থেকে সারা দিন নিজের খরচের পর যা থাকে তাই নিয়ে যান। আজ সেখান থেকে ১০০ টাকা বন্যার্তদের জন্য দিলেন। তিনি বলেন, যা আছে তার মধ্যেই তো দান করতে হবে।

এরপরই একজন নারী এসে ১০ হাজার টাকা দিয়ে গেলেন। শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই অনেক মানুষ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে ভিড় করতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা একটি রেজিস্টারে নাম লিখে সবার কাছ থেকে টাকা ও জিনিসপত্র জমা নেন। এই ভিড়ের মধ্যে পাওয়া গেল একজন রিকশাচালককে। তাঁর নাম বাবু। ৫০ টাকা দিয়ে গেলেন।

আগের দিন শহরের শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন, ‘প্রিয় রাজশাহীবাসী, বানভাসি মানুষের জন্য শুকনা খাবার, ওষুধপত্র, খাওয়ার স্যালাইন, স্যানিটারি ন্যাপকিন, বেবি ফুড, বিছানার চাদর, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, মোমবাতি, নগদ অর্থসহ দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় ও অপচনশীল যেকোনো জিনিস নিয়ে আগামীকাল চলে আসুন আমাদের বুথে। আমরা সেসব জিনিস সংগ্রহ করে ভলান্টিয়ারদের মাধ্যমে বন্যাকবলিত অঞ্চলে পাঠিয়ে দেব। সামর্থ্য অনুযায়ী যে যেটুকু পারবেন তাই নিয়ে বিনা সংকোচে চলে আসবেন আমাদের কাছে। জনসংখ্যায় নয়, মানুষে মানুষে ভরে উঠুক বাংলাদেশ।’

এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে নগরের অলকার মোড়ে ‘প্রিয়শখ’ নামের একটি দোকানের সামনে ভিড় করেন মানুষ। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত তাদের কাছে জমা পড়েছে এক ট্রাকের বেশি বিভিন্ন ধরনের ত্রাণসামগ্রী ও প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

এ রকম বুথ রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট, সিএনবির মোড়, ভদ্রার মোড়, কোর্ট স্টেশন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে খোলা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁরা শহরের বুথ থেকে ত্রাণসামগ্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী কলেজে পাঠাচ্ছেন। সেখান থেকে একযোগে দুর্গত এলাকায় পাঠানো হবে।