আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংষর্ষের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান। আজ রোববার বেলা ১১টায় বগুড়ার সাতমাথা এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার এ ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে দুটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮০ জন।

তিনজনের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ। এছাড়া আরও একজন দুপচাঁচিয়ায় মারা যান। নিশ্চিত করেছেন বীরকেদার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

নিহতের মধ্যে দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। দুপচাঁচিয়ায় ঘটনাস্থলেই মারা যান মনিরুল ইসলাম (২২)। তিনি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা সদরের বদলগাছীর বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তাঁর বাড়ি কাহালু উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়নের বীরকেদার দক্ষিণপাড়া গ্রামে। অন্যজনের নাম জিল্লুর রহমান (৪৫)। তাঁর বাড়ি গাবতলী উপজেলায়। অন্য দুজনের বয়স আনুমানিক ৬০ ও ৩৫ বছর।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচির ডাকে সাড়া দিয়ে সকাল থেকে বগুড়ার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক অবরোধ করে রাখেন হাজারো বিক্ষোভকারী। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে রাস্তায় আগুন দেওয়া হয়। সবচেয়ে উত্তপ্ত বগুড়া শহর ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা। সকালে আওয়ামী লীগ মাঠে এলে তাদের ধাওয়া দেন আন্দোলনকারীরা। এরপর তারা সেখান থেকে চলে যায়। এখন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে ছাত্র-জনতার।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, পৌনে চারটা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গুলিবিদ্ধ তিনজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ ৬৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।

কাহালু উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, মনিরুল ছাত্র আন্দোলন করতে দুপচাঁচিয়া উপজেলায় গিয়ে গুলিতে নিহত হয়েছেন।

এ ছাড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শফিক আমিন কাজল বলেন, এ হাসপাতালে বিকেল পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, ‘বহু স্থানে আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর হামলা করেছেন। থানায় হামলা করেছেন। সরকারি স্থাপনায় হামলা-অগ্নিসংযোগ করেছেন। হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। সহিংসতায় কেউ মারা গেছেন কি না, তা পুলিশের জানা নেই।’