বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে সাতমাথায় বীরশ্রেষ্ঠ স্মৃতিস্তম্ভে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকেলে শহরের সাতমাথা এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পদযাত্রা, গণমিছিল ও সমাবেশ করছেন। শুক্রবার জুমার নামাজের পর বৃষ্টির মধ্যে শহরের রাস্তায় রাস্তায় শিক্ষার্থীদের ঢল নামে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন অভিভাবকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বেলা দুইটা থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলে-স্লোগানে কার্যত উত্তাল বগুড়া শহর। শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে আছেন। তবে কোথাও বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীরা সাতমাথায় অবস্থান নেওয়া সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, বেলা দুইটার দিকে শহরের স্টেশন সড়কের বায়তুর রহমান জামে মসজিদ থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কিছু মুসল্লি গণমিছিল বের করেন। মিছিলটি সাতমাথায় এসে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে জলেশ্বরীতলা শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক থেকে শিক্ষার্থীদের আরেকটি মিছিল কালিবাড়ী মোড় হয়ে সাতমাথায় এসে অবস্থান নেয়। শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ জুমার নামাজের পরপরই শহরের করনেশন ইনস্টিটিউশনের সামনে অবস্থান নেয়। সাতমাথা থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বড়গোলা হয়ে করনেশন ইনস্টিটিউশনের সামনে গেলে দুটি অংশ একত্র হয়ে আবার সাতমাথায় ফিরে আসে।
বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা কালিবাড়ি মোড় থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিল। শুক্রবার বিকেলে বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা কালিবাড়ি মোড় এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
শিক্ষার্থীদের মিছিল-স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে সাতমাথা এলাকা। বেলা তিনটার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল বাছেদের নেতৃত্বে বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবী ও পেশাজীবীরা মিছিল নিয়ে সাতমাথায় এসে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। বিকেল সাড়ে চারটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সাতমাথা শিক্ষার্থীদের মিছিলে মুখর ছিল।
এ সময় ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘শিক্ষার্থীদের বুকে গুলি কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘দিনে নাটক, রাতে আটক’ প্রভৃতি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলের ফাঁকে ফাঁকে সমাবেশে কয়েকজন শিক্ষার্থী বক্তব্য দেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের গুলি করে, হত্যা করে, গণগ্রেপ্তার করে কোনো আন্দোলন দমানো যায়নি। রক্তে ভেজা বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের খুনিদের ঠাঁই হবে না। বায়ান্ন, উনসত্তর, একাত্তর ও নব্বইয়ে বুকের রক্ত ঢেলে বিজয়ী হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এবারও শিক্ষার্থীদের রক্ত বৃথা যাবে না। শিক্ষার্থী হত্যাকারী হায়েনাদের শাস্তিসহ ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে যাবেন না।