বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
আজ রোববার সকাল ১০টায় জেলা জজ আদালতের সব এজলাসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন কর্মচারীরা। এতে বিচারকাজ বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন সেবাপ্রার্থীরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এজলাসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মচারীদের একাংশ দিনভর বিক্ষোভ করেন।
আজ সকাল ১০টার দিকে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রত্যাহারের দাবিতে আদালতের এজলাসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে কর্মচারীদের একাংশ বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভকারীরা ওই দুই বিচারকের বিরুদ্ধে কর্মচারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ, হয়রানি, অপদস্থ করা ছাড়াও বিদায়ী জেলা প্রশাসকের সংবর্ধনা আয়োজন করার অভিযোগ তুলে অপসারণের দাবি জানান। আন্দোলনের কারণে মধ্যহ্ন বিরতির আগে কোনো আদালত বসেনি। বিচারিক কাজও হয়নি।
এ বিষয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বগুড়া জজশিপ মিনিস্ট্রিরিয়াল কর্মচারী সমিতির সদস্যসচিব আরিফুল হক বলেন, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামানকে প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন চলছে। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আইন মন্ত্রণালয় থেকে দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আশ্বস্ত করা হয়েছে। এ কারণে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল (সোমবার) থেকে আদালতে বিচারিক কার্যক্রম চলবে।
বগুড়া জজ আদালতের প্রধান হিসাবরক্ষক তরিকুল ইসলাম বলেন, চাকরির মেয়াদ চার বছর পূর্ণ করেছেন, আদালতের এমন সেরেস্তাদের মধ্য থেকে একজনকে নাজির নিয়োগ দেওয়ার কথা। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নাজির নিয়োগ না দিয়ে জেলা ও দায়রা জজ নিয়ম ভেঙে শাহীন ইকবাল নামে কনিষ্ঠ এক কর্মচারীকে নাজির নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি কর্মচারীদের রাত ৯টা পর্যন্ত আদালতে কাজ করতে বাধ্য করতেন। এ ছাড়া শুক্র ও শনিবারও তিনি কর্মচারীদের অফিসে আসতে বাধ্য করতেন।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল বাসেত বলেন, একজন সৎ বিচারক হিসাবে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সুনাম আছে। এখানে যোগদানের পর তিনি আদালত অঙ্গনে ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করেছেন এটাও সত্য। এ কারণে কতিপয় অসৎ কর্মচারী কোণঠাসা ছিলেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর আদালত অঙ্গণে কোনো দলবাজি করেছেন বলে শোনা যায়নি। বিচার কার্যক্রমে কোনো প্রভাব খাটানোর অভিযোগও নেই। তবে তিনি একসময় ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এ কারণে কর্মচারীদের একটি অংশ তাঁর প্রত্যাহার চেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।