বিশেষ প্রতিবেদক: কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সংঘর্ষে ৩২ শিশু মারা যাওয়ার কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত সরকারের হাতে নেই। আজ শনিবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক সঞ্জয় উইজেসেকেরা এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সংঘাত-সংঘর্ষে ৩২ শিশু মারা গেছে বলে বলা হয়েছে। বিবৃতিটি বাংলাদেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এটি সরকারের দৃষ্টিগোচর হলে আজ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিটি দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইউনিসেফের বিবৃতিতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রের উল্লেখ নেই। নিহতদের নাম, পরিচয়, তালিকা উল্লেখ নেই। তবে ইউনিসেফের পক্ষ থেকে নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রের উল্লেখসহ ৩২ শিশু মৃত্যুর তালিকা সরবরাহ করা হলে বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে যেকোনো অপপ্রচার বা গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকার।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিশুসহ বাংলাদেশে কোনো মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিত একটি মৃত্যুও সরকারের কাম্য নয়।  কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাত-সংঘর্ষে প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে সরকার।

সঞ্জয় উইজেসেকেরা বিবৃতিতে অনেক শিশু আহত হয়েছে ও অনেককে আটক করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইউনিসেফের বিবৃতিতে শিশুদের বেআইনিভাবে আটকের বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সরকারের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জ্ঞাতসারে কোনো শিশুকে বেআইনিভাবে আটক করেনি। কোথাও এ–সংক্রান্ত ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকলে তা জানা মাত্রই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে কোটা আন্দোলনে সংঘাতের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিন হত্যা মামলায় ১৭ বছর ৩ মাস ৮ দিন বয়সী এক কিশোরকে আইনের আওতায় নেওয়ার বিষয়ে বলা, এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বক্তব্য হলো, এই কিশোর সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মাতুয়াইল হাসপাতালের বিপরীত পাশে এক পুলিশ সদস্যকে মেরে ঝুলিয়ে রাখার মামলায় ১৭ জন আসামির মধ্যে ১৬ নম্বর আসামি। সর্বশেষ তার রিমান্ডের আবেদন বাতিলপূর্বক শিশু আইন অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তাকে গাজীপুরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকার সব সময় শিশুদের ব্যাপারে অত্যন্ত সংবেদনশীল ও শিশুদের অধিকার সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিশুদের নিয়ে যেকোনো আন্তর্জাতিক আইন, সনদ বা ঘোষণা মেনে চলতে বাংলাদেশ সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সংঘর্ষে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কয়েকজন শিশু নিহত হওয়ার ঘটনায় সরকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ও গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি শিশুদের হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।