হত্যা মামলায় সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানকে আজ শুক্রবার আদালতে হাজির করা হয়। একটি হত্যা মামলায় তাঁর আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: নিউমার্কেট থানায় করা হকার শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানকে আট দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ শুক্রবার এ আদেশ দেন।

এর আগে জিয়াউল আহসানকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে জিয়াউল আহসানের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত জিয়াউল আহসানকে আট দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। এর আগে গ্রেপ্তার সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকেও এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ডিবি পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের দুজনেরও ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

জিয়াউল আহসানের আইনজীবী নাজমুন নাহার আদালতকে বলেন, তাঁর মক্কেল কখনো ডিজিএফআইয়ে কর্মরত ছিলেন না। তিনি ‘আয়নাঘর’ (গোপন বন্দিশালা) বানাননি। ফেসবুকে তাঁকে নিয়ে মিডিয়া ট্রায়াল করা হচ্ছে। গত ৭ আগস্ট বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়।

অপর দিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ উল্লাহ খান আদালতকে বলেন, এই জিয়াউল আহসান গুম-খুনের নায়ক। তিনি ‘জেনোসাইড’-এর সঙ্গে যুক্ত। আয়নাঘরের জনকও তিনি। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার ক্রীড়নক হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত। সদ্য সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা ২০১২ সালের পর থেকে এক যুগ ধরে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাবলম্বীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে অপহরণ ও গুমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

শুনানির এক পর্যায়ে জিয়াউল আহসান আদালতকে বলেন, ‘আমাকে ৭ আগস্ট বাসা থেকে নিয়ে গেছে। আমি আয়নাঘরে ছিলাম। আমি কোনো আয়নাঘর বানাইনি। আমার হার্টের ৭০ ভাগ ব্লকড। আমাকে স্বেচ্ছায় অবসর দেওয়া হয়েছে। আমি কখনো ধানমন্ডিতে যাইনি। এনটিএমসি কেবল ডিজিটালি গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছে। আমার নামে আগে কখনো মামলা হয়নি।’

ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর গত মঙ্গলবার মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আজ শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) একটি খুদে বার্তায় জিয়াউল আহসানকে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়। বলা হয়, নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।