রাওয়ালপিন্ডিতে সেঞ্চুরির পর মুশফিকুর রহিম | এএফপি |
ক্রীড়া প্রতিবেদক: রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ঐতিহাসিক জয়ে ম্যাচসেরা হওয়ার পর পাওয়া প্রাইজমানি বাংলাদেশের বন্যার্ত মানুষের সহায়তায় দান করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। পাকিস্তানকে আজ ১০ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ, প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানের ইনিংসের সৌজন্য ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে সঞ্চালক বাজিদ খানকে মুশফিক বলেন, ‘বাজিদ ভাই, আমার দলের অনুরোধে এই প্রাইজমানি বন্যার্তদের দান করতে চাই। আমি দেশের সবাইকে অনুরোধ করব, যাদের সামর্থ্য আছে সবাই যাতে এগিয়ে আসে।’
ম্যাচসেরা হয়ে মুশফিক পেয়েছেন ৩ লাখ পাকিস্তানি রুপি বা প্রায় ১ লাখ ২৮ হাজার ৭১৫ টাকা। আচমকা বন্যায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে এখনো পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ। এর আগে বাংলাদেশে ঐতিহাসিক এক গণ-অভ্যুত্থানও হয়ে গেছে। দেশের এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই আনন্দের একটি উপলক্ষ হয়ে আসতে পারে বাংলাদেশ দলের এ জয়।
তাতে সবচেয়ে বড় অবদান নিশ্চিতভাবেই মুশফিকের। এমন একটি ইনিংস খেলার পর তিনি বলেছেন, ‘প্রথমেই আলহামদুলিল্লাহ, সর্বশক্তিমান আল্লাহকে ধন্যবাদ। অবশ্যই এটি আমার সবচেয়ে ভালো ইনিংসগুলোর একটি। যেমনটি বললেন, বিদেশে তেমন ভালো করিনি। ফলে এটি আমাদের একটি লক্ষ্য ছিল দল হিসেবে, যাতে পারফর্ম করতে পারি, যাতে সবাই দেখে যে আমরা বিদেশে ব্যাটিংয়ে উন্নতি করছি।’
এমন জয়ের পর মুশফিক আলাদা করে বলেছেন পাকিস্তান সিরিজের আগে বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্পের কথাও। তিনি বলেন, ‘নিজের কিছু ভাবনার কথা বলতে চাই। এ সিরিজের আগে প্রায় আড়াই মাসের একটা বিরতি ছিল। আমরা বাংলা টাইগার্সের হয়ে বিশেষ একটা ক্যাম্প করেছি দেশে। স্থানীয় সাপোর্ট স্টাফের দারুণ সহায়তা পেয়েছি। এটি আমাদের সহায়তা করেছে, বিশেষ করে টেস্ট খেলোয়াড়দের। কারণ সীমিত ওভারে যারা খেলে, তারা বিশ্বকাপে ব্যস্ত ছিল। দেশেও এমন আবহাওয়াই ছিল। ওই অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের মানসিক কাঠিন্য এসেছে। আমি ওই ক্যাম্পের সব সাপোর্ট স্টাফকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
সব মিলিয়ে প্রস্তুতিটা দারুণ ছিল বলেও জানান তিনি, ‘কৃতিত্ব আসলে সবাইকে দিতে হবে, যেভাবে তারা সবাই প্রস্তুতি নিয়েছে। পাকিস্তানে এবং এর আগে দেশেও। আমি খুশি। তাদের থেকেও সব রকমের সহায়তা পেয়েছি।’
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৯ বছর পার করে ফেলা মুশফিক এখনো নিজেকে সৌভাগ্যবান
মনে করেন বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পেরে। তাঁর মতে, ‘সত্যি বলতে আমি ভাবি না
যে আমি সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও বয়স্ক ক্রিকেটার। কারণ দলের সবাইকে দেখলে মনে হয়,
এটি আমার সৌভাগ্য যে দেশের হয়ে আরেকটি টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারছি। আমি শুধু
নিজের শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করি। দলের জন্য অবদান রাখতে পারলে যদি অন্যরা
অনুপ্রেরণা পায়। আমি এ কারণেই এখানে, এটিই আমাকে এগিয়ে নেয়।’