ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সোমবার বিকেলে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব আবদুস সালাম তালুকদারের স্মরণসভায় কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছবি: বিএনপির সৌজন্যে

বিশেষ প্রতিনিধি: ছাত্র–জনতার অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়কে ভন্ডুল করে দিতে আওয়ামী লীগ দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এই কথা আমি জোরের সঙ্গে বলছি এবং এ কথা আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই যে বাংলাদেশে মানুষের যে শত্রু, যাঁকে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে, তাঁকে আশ্রয় দিয়ে ভারত জনগণের খুব ভালোবাসা পেতে পারে বলে আমি মনে করি না।’

আজ সোমবার বিকেলে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব আবদুস সালাম তালুকদারের স্মরণসভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এক ফ্যাসিবাদ গেছে, আরেক নয়া ফ্যাসিবাদ আমদানি করতে পারি না। আমি এটাকে নয়া ফ্যাসিবাদ বলি এই জন্য যে ওই আওয়ামী লীগই আজ দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করছে বাংলাদেশের এই বিজয়কে ভন্ডুল করে দিতে।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-উত্তর পরিস্থিতির উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমরা স্বাধীন হয়েছি ঠিক, কিন্তু এখনো স্থিতিশীল হতে পারিনি। এখনো গণতন্ত্রকে সেভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। এখন একটা অন্তর্বর্তী সরকার আছে। এই সরকারকে আমাদের সবাইকে সমর্থন দিয়ে শক্তভাবে দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে। এখন যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁরা রাজনীতি করেন না। তাঁরা অল্প সময়ের জন্য এসে এই রাষ্ট্রকে যে ধ্বংস করা হয়েছে, সেটাকে টেনে তোলার চেষ্টা করছেন।’

অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কথা না বলার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন এ সময় কোনো নেতিবাচক কথা বলে বা কোনো নেতিবাচক কাজ করে, এই প্রচেষ্টাকে ভন্ডুল করে দেওয়া একেবারেই ঠিক কাজ হবে না। আমরা দেখি, সহায়তা করি, ইনশা আল্লাহ, অতীতের মতো এবারও আমরা সফল হব। একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক একটি সংসদ ও সরকার গঠন করতে পারব।’

বিএনপির মহাসচিব ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সংস্কারের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ৩১ দফায় অনেকগুলো সংস্কারের কথা বলেছি। ছাত্ররা, নেতারা (অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) সংস্কারের কথা বলছেন, এই সংস্কারকে স্বাগত জানাই। আমরাও ৩১ দফায় একই ধরনের সংস্কারের কথা বলেছি। আজকে ধৈর্য ধরে, আমাদের দায়িত্ব হবে নতুন যে অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে, সেই নতুন অধ্যায়কে আমাদের বরণ করে নিতে হবে।’

এই বিজয়কে ম্লান করে দেওয়ার জন্য যাঁরা বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হয়েছেন, তাঁরা কেউ দেশপ্রেমিক নয় বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, তাঁরা দেশদ্রোহী, তাঁদের রুখে দিতে হবে, পরাজিত করতে হবে আরেকটি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে।

আবদুস সালাম তালুকদার স্মৃতি পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এ এস আবদুল হালিম ও আবদুস সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল এইচ খান প্রমুখ।