রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (নিটোর) | ছবি: সংগৃহীত |
নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার কথা বলে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়ে টাকা তোলার সময় একটি চক্রকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (নিটোর) ওই চক্রকে ধরেছেন। নিটোর পঙ্গু হাসপাতাল নামে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে কয়েক ব্যক্তি পঙ্গু হাসপাতালে পোস্টার লাগিয়েছেন। ওই পোস্টারে লেখা হয়—‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহিংসতায় হতাহতদের তথ্য ও সহায়তা কেন্দ্র’। এতে কয়েকজনের নাম ও মুঠোফোন নম্বর উল্লেখ করা হয়। সমন্বয়ক দাবি করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও নিটোর সমন্বয়ক সুহানা ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামান্না ইসলাম, ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মুহসিন আহমেদ, হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জোবায়ের হোসেনসহ আরও এক শিক্ষার্থী।
এ খবর পেয়ে পঙ্গু হাসপাতালে যান হাসনাত আবদুল্লাহ। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের না জানিয়ে এভাবে টাকা তোলা হয়েছে।’ সমন্বয়ক বা সহসমন্বয়ক নামে যাঁরা পরিচয় দিচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে ন্যূনতম কোনো আর্থিক লেনদেন না করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কেউ আর্থিক সহায়তা দিতে চাইলে তাঁদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানান হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, যদি পরিবারের কেউ আহত হয়ে থাকেন, তাহলে নিজে গিয়ে নিজ হাতে টাকা দেবেন। তিনি আরও বলেন, ‘সমন্বয়কদের নামে দেশের বিভিন্ন জায়গায় টাকা তোলা হচ্ছে। সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়ক পরিচয়ে কারও সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করবেন না। কারণ, কেন্দ্রীয়ভাবে টাকাপয়সা তোলার কাজে উৎসাহ দিচ্ছি না। আমাদের প্রয়োজন পড়ছে না। বরং আমরা যে কাজটি করছি, আমরা সরকারকে এনাবল (ক্ষমতায়ন) করছি। যেখানে টাকার প্রয়োজন হবে, সেখানে সরকার দিতে বাধ্য থাকবে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর পর থেকে আমাদের একটা টাকাও লেনদেন নাই। আমরা কারও কাছ থেকে টাকা তুলিনি। এটাই ছিল আমাদের আন্দোলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। যখনই টাকা আসে, তখনই আন্দোলন বিতর্কিত করার চেষ্টা থাকে।’
আহত ব্যক্তিদের বিষয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা সব হাসপাতালে যাচ্ছি। সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে গিয়েছি। সেখানে আহতদের জন্য আলাদা ইউনিট করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি সব হাসপাতালে একই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আহতদের ওই সব ইউনিটে বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হবে।’