ফেনীর বন্যার্তদের জন্য রেলওয়ের উদ্যোগে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারী ট্রেন

 

চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থেকে ফেনীর উদ্দেশে আজ শনিবার সকালে উদ্ধারকারী ট্রেন রওনা দিয়েছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি চট্টগ্রাম: সাধারণত রেললাইনে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ডাক পড়ে উদ্ধারকারী ট্রেনের, লাইনচ্যুত কিংবা দুর্ঘটনাকবলিত রেল উদ্ধারে কাজ করে এই ট্রেন। তবে এবার ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটছে। স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ফেনী। এই অঞ্চলের মানুষের জন্য ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে রেলের উদ্ধারকারী ট্রেন।

আজ শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থেকে ফেনীর উদ্দেশে এই ট্রেন রওনা দিয়েছে। প্রায় ছয় হাজার মানুষের জন্য খাবার, কাপড় ও ওষুধ নিয়ে এই ট্রেন যাচ্ছে বন্যাকবলিত এলাকায়।

উদ্ধারকারী ট্রেনে করে ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার কার্যক্রমে তদারকির কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) সাজিদ হাসান। তিনি বলেন, এবারের বন্যায় ফেনীর অনেক জায়গায় রেললাইন ডুবে যায় ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এগুলো দেখতে শনিবার পরিদর্শন ট্রেন যাওয়ার কথা ছিল। তখন তাঁরা চিন্তা করেন, এই ট্রেনে করে ত্রাণ নিয়ে যাওয়া কি না। পরিকল্পনার কথা জানাতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাতে সায় দেন। এরপর শুক্রবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে পোস্ট দেন। এতে মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পান। রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

বন্যার্তদের জন্য খিচুড়ি, ডিম নিয়ে যান উদ্ধারকারীরা। আজ শনিবার সকালে ট্রেনটি রওনা দেয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, তাঁরা প্রায় ছয় হাজার মানুষের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছেন। শুকনা ও রান্না করা, দুই ধরনের খাবার আছে। সঙ্গে আছে কাপড়, ওষুধ, খাওয়ার পানি। যাত্রাপথে চিনকি আস্তানা, ফাজিলপুর, মুহুরীগঞ্জ ও ফেনী স্টেশনে ত্রাণ বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বন্যায় আটকা পড়া মানুষদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে।

উদ্ধারকারী ট্রেনে কোস্টগার্ডের ২০ সদস্যের একটি দল রয়েছে। তাঁদের সঙ্গে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর জন্য ভাসমান বোট আছে। তাঁরা ফেনীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে উদ্ধার তৎপরতা কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি রেললাইনের ক্ষয়ক্ষতিও নিরূপণ করার কাজ করবেন রেলওয়ের প্রকৌশলী ও কর্মকর্তারা। এবারের বন্যায় রেললাইন ডুবে যাওয়া এবং সরে যাওয়ায় চট্টগ্রামের সঙ্গে সারা দেশের রেল চলাচল বন্ধ আছে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে৷

গতকাল শুক্রবার রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী সাজিদ হাসান ফেসবুকে পোস্টে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়ে ত্রাণের জন্য আহ্বান জানান।

এই পোস্টের পর বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে জানান প্রকৌশলী সাজিদ হাসান।