রংপুর কারাগারে বন্দী মৃত্যুর ঘটনায় ২ কারারক্ষী সাময়িক বরখাস্ত, পরিস্থিতি শান্ত

রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে দায়িত্ব পালন করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। আজ শুক্রবার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রংপুর: রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত একজন কয়েদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উত্তেজনা বিরাজ করলেও বিকেল থেকে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে শাহজাহান ও মোতালেব নামের দুই কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

আজ সকালে কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর গাছ থেকে আমড়া পেড়ে খাওয়ার ঘটনায় দুই কয়েদির মধ্যে বিরোধ বাধে। এতে বাহারুল (৫৬) নামের এক কয়েদি মারা যান। তাঁর বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায়। তিনি একটি হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কারাগারে বন্দীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান ও সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কারাগারে যান। তাঁরা বিক্ষুব্ধ বন্দীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, গাছ থেকে আমড়া পেড়ে খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদের এক পর্যায়ে রফিকুল নামের এক বন্দী বাহারকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। কারাগারের কর্তব্যরত নার্স এসে বাহারের শরীরের পালস পাচ্ছিলেন না। তাঁকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে সকাল সাড়ে আটটার দিকে তিনি মারা যান।

কারাগারের পাশে মেডিকেল মোড় এলাকার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সকাল থেকে কারাগারের ভেতর থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন। এ সময় লোকজন ছোটাছুটি করছিলেন। রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলোকে থামিয়ে দেওয়া হয়। সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কারাগারের সামনে ও প্রধান সড়কে অবস্থান নেন। কারাগারের ভেতর থেকে বিক্ষুব্ধ কয়েদিদের স্লোগান শোনা যাচ্ছিল। এতে স্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দেয়।

গোলাগুলি প্রসঙ্গে রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, একজনের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে কারাগারের ভেতরের বন্দীরা প্রধান ফটক ধাক্কাধাক্কি করার চেষ্টা করলে কারারক্ষীরা ফাঁকা গুলি ছোড়েন। তিনি বলেন, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে শাহজাহান ও মোতালেব নামের দুই কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগিতায় একটি তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।