নাটোর জেলার মানচিত্র

প্রতিনিধি নাটোর: নাটোর-২ (সদর) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শফিকুল ইসলামসহ (শিমুল) ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে দুটি মামলা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে মামলা দুটি সদর থানায় দায়ের করা হয়। এর একটির বাদী জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন এবং অন্যটির বাদী জেলা যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম আফতাব।

নাটোর সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীনের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম ও তাঁর ভাই সাজেদুল ইসলাম, সাবেক কমিশনার জাহেদুর রহমান, জামিল হোসেন, সায়েম হোসেন, খোকন মিয়াজি, মলয় কুমার রায়, আমিনুল ইসলাম, কোয়েল, কানন, সেলিম, সজীব, সবুজ, মাহাতাব কমিশনার, সৌমেন, রাসু, শিহাব, স্বপন, হৃদয়, আলিফ, জনি, সুমন, হৃদয় আলী, সুমন মৃধাকে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৩ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২টায় বাদী দেওয়ান শাহীন নাটোর আদালত থেকে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে মোটরসাইকেলে করে সিংড়া উপজেলায় যাচ্ছিলেন। সওজ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে আসামিরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গতি রোধ করে রাস্তায় ফেলে দেন। পরে তাঁকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যার চেষ্টা করে আসামিরা। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে থানায় মামলা করতে গেলে শফিকুল ইসলামের নির্দেশে পুলিশ মামলা নেয়নি। অবশেষে ক্ষমতার পটপরিবর্তনে বাদী আজ মামলাটি দায়ের করেন।

আরেক মামলায় বাদী হয়েছেন জেলা যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম। এতে সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর সকালে নামাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন সাইফুল। এ সময় আসামিরা তাঁর বাড়ির সামনে পথ রোধ করে বেপরোয়া গুলি ছুড়তে থাকেন। গুলি তাঁর হাতে ও পায়ে লেগে তিনি গুরুতর আহত হন। দীর্ঘদিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা করতে কিছু বিলম্ব হয়েছে বলে বাদী উল্লেখ করেছেন।

পুলিশ দুটি মামলা গ্রহণ করেছেন। তবে বিকেল পর্যন্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ হয়নি। নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খুব শিগগিরই মামলার তদন্ত শুরু হবে। একই সঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

বড়াইগ্রামে সাবেক সংসদ সদস্যসহ আসামি ৬২
নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীসহ ৬২ জনের নামে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে নাসির গাজী নামের জামায়াতের এক নেতা বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় মামলাটি করেন।

বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক শফিউল আযম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাদী নাসির গাজী উপজেলার মালিপাড়া গ্রামের জামাল গাজীর ছেলে ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী।

মামলার আসামিরা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী মিজানুর রহমান, ভাগনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জামাল উদ্দিন মিয়াজী, শামসুদ্দিন শেরশাহ, জহির উদ্দিন ও বাহাউদ্দিন, বনপাড়া পৌর যুবলীগ সভাপতি জাকির সরকার, ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম ওরফে টিটু , ইউনুস আলী, সজীব হোসেন, আশরাফুল মণ্ডল, তোহা মিয়া, উপজেলা কৃষক লীগ সভাপতি রুবেল বালি, ওমর ফারুক পাটোয়ারী, রফিকুল ইসলাম ওরফে পারভেজ, সিরাজ পাটোয়ারী, সাইমুন পাটোয়ারী, হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, রুবেল হোসেন, তুহিন ব্যাপারী, সাইফুল ইসলাম, রবিউল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ থেকে ৪০ জন।

নাসির উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বনপাড়া এলাকার একটি কিন্ডারগার্টেনের সামনে আসামিরা তাঁদের তিনটি মোটরসাইকেল, একটি ল্যাপটপ পুড়িয়ে দেয়। এ সময় তাঁর ছেলে মুন্না রহমান ও বনপাড়া পৌর কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন মনির আগুন নেভাতে গেলে সংসদ সদস্য ও বনপাড়া পৌর যুবলীগের সভাপতি জাকির সরকারের নির্দেশে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করেন আসামিরা। হামলায় নাসির উদ্দিন, মুন্না রহমান ও কাউন্সিলর মনির আহত হন।

এ সময় মালিপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমান জুয়েল, আবদুল মমিন, হারোয়া গ্রামের আবদুল্লাহ আল আওয়াল মমিন, মহিষভাঙ্গা গ্রামের আনাস মোল্লা তাঁদের উদ্ধার করতে এগিয়ে গেলে তাঁদেরও পিটিয়ে জখম করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গিয়ে আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আযম খান বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।