বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। তাই নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন তাঁরা। আগরতলা, ত্রিপুরা ২০ আগস্ট | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
সংবাদদাতা কলকাতা: টানা চার দিনের ভারী বৃষ্টিতে উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের প্রধান ১০টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত বন্যায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায়ও ত্রিপুরায় বৃষ্টি থামেনি। ফলে রাজ্যের ১০টি প্রধান নদীতে পানির স্তর সতর্কতার সীমা পেরিয়েছে। নদীগুলো হলো হাওড়া, মনু, লঙ্গাই, জুরি, ধলাই, খোয়াই, দেও, গোমতী, মুহুরী ও ফেনী। রাজধানী আগরতলায় কোথাও হাঁটুসমান পানি, কোথাও বুকসমান বা তারও বেশি।
বৃষ্টির পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রধান নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে অসংখ্য মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ বিকেল পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার পরিবারের ৪০ হাজার মানুষ ৩৫০টি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, আসাম ও অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এনডিআরএফের (ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স) ১১টি দলকে ত্রিপুরায় পাঠানো হবে। বন্যাকবলিত এলাকায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে হেলিকপ্টারেরও ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে বন্যার কারণে ত্রিপুরার বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। সোনামুড়া থানার দুর্লভনারায়ণ গ্রামে আজ সকালে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে তলিয়ে গেছেন সিদ্দিকুর রহমান ও সুব্রত দাস নামের দুই ব্যক্তি। পরে তাঁদের মরদহে উদ্ধার করা হয়।
গর্জি ও বিলোনিয়ার মধ্যে ভূমিধসের কারণে আগরতলা–সাবরুমের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আগরতলা শহরের অভয়নগর ও ভাটি অভয়নগরে বিদ্যুৎ পরিষেবা আপাতত বন্ধ রেখেছে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা প্রশাসন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়ছে। এ ছাড়া বন্যার কারণে আরও অনেক স্থানে বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে।
এদিকে ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ থেকে পানি ছাড়ার কারণে বাংলাদেশে বন্যা হয়েছে বলে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের জাতীয় সংবাদপত্রগুলোতে ত্রিপুরা নিয়ে এটিই ছিল বৃহস্পতিবারের অন্যতম প্রধান খবর।