নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা, বিক্ষোভে উত্তাল কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতাল

আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন চিকিৎসকেরা। কলকাতা, ভারত | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি কলকাতা: ভারতের কলকাতায় নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এ ঘটনার প্রতিবাদে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকেরা।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে সঞ্জয় রায় নামের এক স্বেচ্ছাসেবককে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। ওই ব্যক্তি ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে সঞ্জয় রায় একাই জড়িত ছিলেন কি না, সেটি নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। এর পেছনে আরও কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে কাজ করছিলেন ওই চিকিৎসক। দিবাগত রাত দুইটার দিকে বাইরে থেকে খাবার এনে দুজন বন্ধুর সঙ্গে নৈশভোজ সারেন তিনি। এরপর জরুরি ভবনের চারতলার একটি সেমিনার কক্ষে বিশ্রাম নিতে যান। পরদিন শুক্রবার সকাল আটটার দিকে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা গিয়ে তাঁর মরদেহ দেখতে পান।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই চিকিৎসকের বাড়িতে ফোন করে জানায়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ ও কনিষ্ঠ চিকিৎসকেরা ছুটে আসেন। তাঁরা মরদেহ দেখে অভিযোগ করেন, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। শুরু হয় চিকিৎসকদের আন্দোলন। তাঁরা নিরপেক্ষ ময়নাতদন্ত ও হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন। একই সঙ্গে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতির ডাক দেন। এই ডাকে সাড়া দেয় কলকাতার মেডিকেল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, পিজি হাসপাতাল, এনআরএস হাসপাতালসহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।

একই দাবিতে সোচ্চার হয় বিজেপি, কংগ্রেস, বাম দলসহ রাজ্যের অন্যান্য দল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়ে দেন, ঘটনার সিবিআই তদন্ত করলে তাঁর আপত্তি নেই।

ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে ওই চিকিৎসকের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তক্ষরণের চিহ্ন পাওয়া গেছে। কক্ষের ম্যাট্রেসেও রক্তের চিহ্ন মিলেছে। এ ছাড়া সন্দেহভাজন হত্যাকারীর ছিঁড়ে যাওয়া ইয়ারফোনও পাওয়া গেছে। সে সূত্র ধরেই সঞ্জয় রায়কে শনাক্ত করে পুলিশ।

এ ঘটনায় কলকাতা পুলিশ একটি হত্যার মামলা করে তদন্ত শুরু করেছে। এ ছাড়া পুলিশের একটি বিশেষ তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

ওই চিকিৎসকের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সোদপুরে। তিনি ছিলেন মা-বাবার একমাত্র সন্তান। এমবিবিএস পাস করার পর আর জি কর মেডিকেল কলেজের চেস্ট মেডিসিন বিভাগে পোস্টগ্র্যাজুয়েট করছিলেন।