রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: জনগণ ‘অস্থির’ হওয়ার আগে নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। একই সঙ্গে নির্বাচন কবে হবে, কীভাবে হবে, তার একটা রূপরেখা দিতেও প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছে দলটি।

আজ শনিবার বিকেল চারটার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম ও দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে ‘ফ্যাসিস্ট’ আওয়ামী লীগ সরকার প্রহসনের নির্বাচন করেছে। সেসব নির্বাচনে প্রশাসন, মিডিয়াসহ যাঁরা সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে এই সরকারকে কত সময় দিতে চান, এমন প্রশ্নে রেজাউল করীম বলেন, খুব শিগগির পরিবেশ তৈরি করতে বলা হয়েছে। নির্বাচনটা কবে হবে, কীভাবে হবে, তার একটা রোডম্যাপ (রূপরেখা) দিতেও প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

একই প্রশ্নে দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, জনগণ ‘অস্থির’ হওয়ার আগে নির্বাচন দিতে বলেছেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে জনগণ যাতে ভোট দিতে পারেন, সেই পরিবেশও নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

১৩ দফা প্রস্তাব

এদিকে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের বৈঠকে গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ ১৩ দফা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিদ্যমান সংবিধান নিয়ে নানা বিতর্ক আছে। এ ছাড়া বিগত সময়ে ক্ষমতাসীনেরা দলীয় স্বার্থে সংবিধানে নানা পরিবর্তন এনেছে। এ জন্য বর্তমান সংবিধানকে বাতিলের পর একটি কমিশন গঠন করে নতুন সংবিধানের খসড়া তৈরি করতে হবে এবং গণভোটের মাধ্যমে তা অনুমোদন করতে হবে।

গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, গত ১৬ বছরে ঘটা সব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদের রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

প্রস্তাবে আরও বলা হয়, তদন্ত সাপেক্ষে বিগত বছরের দুর্নীতিবাজ ও অর্থ পাচারকারীর সব সম্পত্তি জব্দ করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে। বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নিতে হবে। সাবেক ক্ষমতাসীনদের সম্পদের হিসাব নিতে হবে। সব দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের যেসব কর্মচারী আইন, সংবিধান, শপথ লঙ্ঘন করে অপেশাদার আচরণ করেছেন, তাঁদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।