জামিন পাওয়া বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পাঁচ বছর পর পাবনার ঈশ্বরদীতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার ঘটনায় করা মামলা বিএনপির ৩০ নেতাকর্মীর জামিন হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্টের আপিল বিভাগের বিজয়-৭১ এর ১১ আদালতের যৌথ বেঞ্চের বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মবিন এবং মো. মাহমুদ হাসান তালুকদার তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে। আসামীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তাঁকে সহযোগিতা করেন এ্যাডভোকেট জামিল আক্তার এলাহী ও এএইচএম কামরুজ্জামান মামুন। এ মামলায় ১৮ জনকে যাবজ্জীবন ও ১২ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত যাঁদের জামিন হয়েছে তাঁরা হলেন- বিএনপি নেতা ও ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নেফাউর রহমান রাজু, আজমল হোসেন ডাবলু, সাবেক ছাত্রদল নেতা ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জনি, ছাত্রদলের সাবেক নেতা মো. রনো, মো. বরকত, চাঁদ আলী, এনামুল হোসাইন, মুক্তার হোসাইন, হাফিজুর রহমান মুকুল, জামিরুল, তুহিন বিন সিদ্দিক ও ফজলুর প্রামাণিক।

১০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত যাঁদের জামিন হয়েছে- বিএনপি নেতা ও ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নেফাউর রহমান রাজু, আজমল হোসেন ডাবলু, সাবেক ছাত্রদল নেতা ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জনি, ছাত্রদলের সাবেক নেতা মো. রনো, মো. বরকত, চাঁদ আলী, এনামুল হোসাইন, মুক্তার হোসাইন, হাফিজুর রহমান মুকুল, জামিরম্নল, তুহিন বিন সিদ্দিক ও ফজলুর প্রামাণিক।

মামলার  বিবরণ থেকে জানা যায়, শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উত্তরাঞ্চলে দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে খুলনা থেকে এই ঘটনায় ঈশ্বরদী জিআরপি (রেলওয়ে পুলিশ) থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক (স্থগিত কমিটি) জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পরের বছর পুলিশ কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র জমা দেয়। ওই সময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু আদালত সে অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে অধিক তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মামলাটির পুনঃ তদন্ত হয়। ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল পুলিশ ঈশ্বরদীর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ ৫২ জনের নামে আদালতে আবার অভিযোগপত্র জমা দেয়। পরে মামলার রায়ে নয়জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। একই মামলায় ২৫ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এ ছাড়া ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড হয়। ২০১৯ সালের ৩ জুলাই পাবনা স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩–এর তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত বিচারক এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. রুস্তম আলী এ আদেশ দিয়েছিলো।  

এদিকে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়া স্থানীয় বিএনপির ৩০ নেতাকর্মীর পরিবার, স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বয়ে গেছে। বন্দিদের পরিবার গুলো বলছে, হাসিনা সরকারের এই মিথ্যা মামলার ফরমায়েশি রায়ে এত দিন এত মানুষের জীবন ও পরিবার হুমকির মুখে পড়ে ছিল। এত দিনে সুবিচার মিলছে। বাকিদের বিষয়েও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।

ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন জুয়েল বলেন, ‘জামিনের খবর পাওয়ার পর নেতাকর্মী ও কারাভোগ করা পরিবারের মাঝে খুশির সীমা নেই। তিনি নিজেও প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণায় আছেন। কখন নেতাকর্মী জেল হাজত থেকে মুক্তি পাবে?’

দলটির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, 'কারাগার যেন বিএনপি নেতাকর্মীর স্থায়ী ঠিকানা ছিল। মহান  আল্লাহপাকের অশেষ রহমতে শেখ হাসিনার ট্রেনে হামলার মিথ্যা মামলার ফাঁসির আসামী বাদে সকলের জামিন মঞ্জুর হয়েছে।'