শেখ হাসিনা | গ্রাফিক:পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প থেকে ঘুষ হিসেবে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিরক্ষাবিষয়ক সংবাদ ওয়েবসাইট ‘গ্লোবাল ডিফেন্স কোর’ (জিডিসি)। জিডিসির খবরে বলা হয়, ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পের ব্যয় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। এতে আরো বলা হয়, রাশিয়া শেখ হাসিনাকে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা রুশ তহবিলের মাধ্যমে ওই ঘুষের অর্থ পাচার করতে সহায়তা করেছে।

‘গ্লোবাল ডিফেন্স কোর’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির জন্য উপযুক্ত বিশেষজ্ঞ ও কর্মী না থাকলেও শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ঘুষ দেওয়ার বিনিময়ে রাশিয়া কোনো নজরদারি ছাড়াই এটি নির্মাণের চুক্তি পায়। পরবর্তী সময়ে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ফ্ল্যাট সজ্জিত করার সামগ্রীর অতিরিক্ত মূল্য ধরা নিয়ে মিডিয়ায় প্রতিবেদন হলে বিষয়টি আলোচনায় আসে। এ কারণে পুরো প্রকল্পটিই প্রশ্নবিদ্ধ হতে থাকে। এ নিয়ে হাইকোর্টে দেওয়া প্রতিবেদনে তদন্ত কমিটি বলেছে, এসংক্রান্ত দাপ্তরিক কার্যক্রম এবং প্রকল্পের ঠিকাদার অনুমোদন বা নিয়োগের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কোনো যোগসূত্র নেই। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ব্যাপারে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘যুক্ত না থাকা’ প্রশ্নের উদ্রেক করে। খবরে বলা হয়, এই অবিশ্বাস্য ব্যয় প্রত্যক্ষ রকমের দুর্নীতির ইঙ্গিত দেয়। দক্ষতা, নিষ্ঠা ও জবাবদিহির অভাব এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি মাত্রাকে জোরদার করেছে।

শেখ হাসিনার স্বৈরতান্ত্রিক শাসন প্রসঙ্গে জিডিসির খবরে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালেই জার্মানির গবেষণা প্রতিষ্ঠান বার্টেলসমান স্টিফটুং বাংলাদেশকে স্বৈরশাসনে থাকা দেশের তালিকাভুক্ত করেছিল। এতে বলা হয়, ২০১৫ সালে টিউলিপ সিদ্দিকী ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে এমপি হওয়ার পর তাঁর খালা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের পার্লামেন্টে বিষয়টি গর্বের সঙ্গে তোলেন। এ সময় তিনি বলেন, তাঁর ছোট বোন ব্রিটিশ নাগরিক শেখ রেহানা (টিউলিপের মা) আর্থিক টানাটানিতে আছেন।

খবরে অভিযোগ করা হয়, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগে টিউলিপ সিদ্দিকী লন্ডনে শেখ হাসিনাকে রুশ প্রতিষ্ঠান রোসাটমের ঘুষ দেওয়ার আলোচনায় মধ্যস্থতা করেন।

মিডিয়ায় প্রচারিত খবরের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিকী বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে ২০১৩ সালে কয়েক শ কোটি ডলারের একটি বিতর্কিত অস্ত্র চুক্তিতেও মধ্যস্থতা করেছিলেন। টিউলিপ ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে মাসিক ভাতা পাচ্ছিলেন। এ ছাড়া তাঁর মা শেখ রেহানাসহ ক্ষমতাসীন শাসক পরিবারের কয়েকজন সদস্য রাশিয়ার কাছ থেকে ৩০ শতাংশ ঘুষ পান। এই অর্থ গোপনে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অফশোর অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ গোপনে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করার কথা চেপে গিয়েছিলেন বলে ব্রিটিশ পত্রিকায় খবর ছাপা হয়। টিউলিপ শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট পুতিনের বাসভবন ও কার্যালয় ক্রেমলিনে গিয়েছিলেন বলে খবরে উল্লেখ করা হয়। সূত্র : জিডিসি