স্বজনের কোলে আড়াই বছরের শিশু মোবাশ্বিরা খাতুন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি বাগমারা: হার্টের সমস্যায় ভুগছে আড়াই বছরের শিশু মোবাশ্বিরা খাতুন। শিশুটির চিকিৎসা নিয়ে উদ্বিগ্ন তার মা। এত দিন জমানো টাকা ও ধারদেনা করে চিকিৎসা চালিয়েছেন তার বাবা কামাল হোসেন।
১৯ আগস্ট ঢাকায় চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে মোবাশ্বিরার বাবা কামাল হোসেন মারা যান।
ওই দুর্ঘটনায় আরও মারা যান শিশুটির বড় চাচা জামাল হোসেন, দাদা জসিম উদ্দিন ও দাদি নার্গিস বেগম। তাঁদের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারার বাসুপাড়া ইউনিয়নের নরসিংহপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে।
নিহত জামাল হোসেন স্ত্রী ও তিন মেয়ে এবং কামাল হোসেন স্ত্রী ও আড়াই বছরের শিশুকন্যাকে রেখে গেছেন। জামাল হোসেনের তিন মেয়ের মধ্যে একজনের বিয়ে হয়েছে। ছোট দুই মেয়ে রয়েছে।
কামাল হোসেনের মেয়ে মোবাশ্বিরা খাতুন জন্মের পর থেকে হার্টের সমস্যায় ভুগছে। হার্টে ছিদ্র থাকার কারণে তার চিকিৎসা চলছে। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা কামাল হোসেন টাকা জমিয়ে ও ধারদেনা করে ভারতে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করেছিলেন। এতে ছয় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এই চিকিৎসা চলমান রয়েছে। গত মার্চে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে এসে আর চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি তিনি। সে সময় থেকে বাড়িতে থেকে নতুন চাকরির সন্ধান করছিলেন তিনি।
কামাল হোসেনের স্ত্রী মরিয়ম খাতুন বলেন, ‘মেয়ের চিকিৎসা নিয়ে চিন্তিত। ওর বাবা বেঁচে থাকলে টেনশন করতে হতো না। এখন আমি কী করব বুঝতে পারছি না। মেয়েটি সব সময় বাবাকে খোঁজে। কান্নাকাটি করে।’
কামাল হোসেনের ফুফাতো ভাই জুলফিকার হোসেন জানান, তাঁর ফুফা, ফুফু ও দুই ফুফাতো ভাইয়ের মৃত্যুর পর পরিবারটি পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। বেঁচে থাকা ছয় সদস্যের সবাই নারী। মেয়েদেরই পরিবারটিকে সামাল দিতে হচ্ছে। স্বজনেরা সহযোগিতা করলেও তা কত দিন টিকে থাকবে, তা বলা যাচ্ছে না। কামাল হোসেনের রেখে যাওয়া আড়াই বছরের অসুস্থ ছোট শিশু মোবাশ্বিরা খাতুনের চিকিৎসা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তার বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায় চিকিৎসার সবকিছু করেছিলেন। এখন কে দায়িত্ব নেবে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁরা।
নিহত ব্যক্তিদের স্বজন শিক্ষক ফজলুর রহমান জানান, তাঁরা এখন দেখাশোনা করছেন পরিবারের বেঁচে থাকা বাকি সদস্যদের। এখনো স্বাভাবিক হতে পারেননি তাঁরা।