রূপপুর প্রকল্পের শ্রমিককে অপহরণ, ৭ দিন পর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার

সিরাজ ফকির | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদীতে নিখোঁজের সাত দিন পর এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে শহরের রহিমপুর এলাকার একটি বাড়ির কক্ষ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত সিরাজ ফকির (৬৫) উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের কৈকুন্ডা গ্রামের মৃত জলিল ফকিরের ছেলে। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে একটি প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন। গত ২৪ আগস্ট থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

পুলিশ জানায়, আজ শনিবার দুপুরে শহরের শৈলপাড়া এলাকার প্রয়াত সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল খালেক রবির ফ্ল্যাটের পাশের বাসা থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে চারতলা বাসার ওই দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় লাশের হাত ও মুখ বাঁধা ছিল। বিষয়টি পরিবারকে জানানো হলে তারা এসে মরদেহ শনাক্ত করেন।

স্থানীয়রা জানান, সিরাজ ফকির তাঁর গ্রামের বাড়ি থেকে নিয়মিত রূপপুর প্রকল্পে চাকরি করতে যেতেন। সাত-আট বছর আগে তাঁর স্ত্রী মারা যান। ২৪ আগস্ট তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ডিউটিতে গিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেননি। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে ২৬ আগস্ট ঈশ্বরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

বাবার লাশ শনাক্তের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন ছেলে আল আমিন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিহতের শ্যালক রাসেল রানা জানান, 'সিরাজ ফকিরের দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। নিখোঁজের পর অজ্ঞাত ব্যক্তিরা সিরাজ ফকিরের ছোট ছেলের মোবাইল ফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের টাকা দাবি করে আসছিলেন। এরপর বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।'

এদিকে রহিমপুর এলাকার বাসিন্দারা জানান, 'সিরাজ ফকির গত ২৪ আগস্ট ওই এলাকার শরিফুল ইসলাম বুলবুলের ভাড়া বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে ওঠেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নাতি ও নাতির বউ পরিচয়ে দুজন নারী-পুরুষ ওই বাড়িতে থাকা শুরু করেন। তবে মরদেহ উদ্ধারের সময় তাদের পাওয়া যায়নি।'

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল বাতেন বলেন, '২৪ আগস্ট নিহতের স্বজনেরা মুক্তিপণের বিষয়টি জানিয়েছিল। আজ ওই বাড়ির চারতলা থেকে দুর্গন্ধ পেলে বাড়ির মালিক তাদের থানায় খবর দেন। তারা গিয়ে দরজার তালা ভেঙে সিরাজ ফকিরের লাশ বাথরুমে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তাঁর দুই হাত ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে বাঁধা ছিল। সেখানে যে দুজন থাকার তথ্য পাওয়া গেছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।'