কুমিল্লার দেবিদ্বারের ফতেহাবাদ ইউপির চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদ দুধ দিয়ে গোসল করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। শনিবার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি কুমিল্লা: কুমিল্লা দেবিদ্বারে দুধ দিয়ে গোসল করে আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। তাঁর নাম কামরুজ্জামান মাসুদ। তিনি উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফতেহাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান।
এর আগে ৫ আগস্টের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কামরুজ্জামান মাসুদ ইটের টুকরা ও হাতে লাঠি নিয়ে ছাত্রদের দিকে ছুড়ে মারছেন। ছাত্রদের যাঁরা মারধর করছেন, তাঁদের সঙ্গে আছেন।
আজ শনিবার কামরুজ্জামান মাসুদ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিককে তাঁর বাড়িতে ডাকেন। বেলা ১১টার দিকে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় চেয়েছি, আমার এই ফতেহাবাদ ইউনিয়নবাসীর পক্ষে থাকার। তাঁরা আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন। দীর্ঘদিন আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকে মামলা-হামলা ছাড়া কিছুই পাইনি। সবকিছু থেকে বারবার বঞ্চিত হয়েছি। ফতেহাবাদ ইউপি নির্বাচনে আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছি, কিন্তু তারা আমাকে দেয়নি। সব সময় একই দলের অন্য নেতা-কর্মীদের হাতে হামলার শিকার হয়েছি। আমি স্বেচ্ছায় অন্যের দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’
এরপর কামরুজ্জামান মাসুদ তাঁর বাসার ছাদে বসে দুধ দিয়ে গোসল করেন। পাশে থাকা আরেকজন ব্যক্তি মগ দিয়ে তাঁর মাথায় দুধ ঢালছেন। এ সময় উপস্থিত লোকজন ও সাংবাদিকেরা এ দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। সবার উদ্দেশে কামরুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘আমি জনগণের ভোটে ফতেহাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। আমি দলীয় চেয়ারম্যান নই। আমি কখনোই চাইনি ছাত্র-জনতার বিপক্ষে থাকতে। ৪ আগস্ট দেবিদ্বারে কী হবে, তা আমি জানতাম না। আমাকে দলের সিনিয়র নেতারা ভুল বুঝিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে গেছেন। তাঁরা আমাকে বলেছেন, দেশে যেসব ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন, তাঁদের প্রতি শোক প্রকাশ করতে দেবিদ্বার স্বাধীনতা চত্বরে শোক র্যালি ও শোক সভা করা হবে। এ জন্য গিয়েছি। আমি গিয়ে যখন দেখলাম ছাত্র-জনতার সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে, তখন আমি বাড়ি আসতে চেয়েছি। কিন্তু তাঁরা আমাকে আসতে দেন নাই। আমি দুই গ্রুপের মাঝখানে পরে গেছিলাম। পরে আমি জীবন বাঁচাতে তাঁদের কথা শুনতে হয়েছে।’