ধানমন্ডি ৩২: হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা ‘পুরো শরীরে মারেন, মাথায় মাইরেন না’

ধানমন্ডি ৩২-এর সামনে পতাকা হাতে ছাত্র-জনতার অবস্থান | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়ক, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের আশেপাশের এলাকা দখলে নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। লাঠি, বাঁশ, পাইপ নিয়ে অবস্থান করছেন আশপাশের এলাকায় অনেক মানুষ। কাউকে কাউকে মারধর করতে দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এই চিত্র দেখা গেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার শোকাবহ দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে কেউ এলেই থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কোথায় যাচ্ছেন, কেন এসেছেন, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। এমনকি পরিচয়পত্র, মুঠোফোন দেখা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা পেলেই পড়তে হচ্ছে মারধরে মুখে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করছেন ছাত্ররা।

এদিকে আন্দোলনকারীরা যাদের আটকে রেখেছেন, তাদেরকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। মারধরের বিষয়ে মাইকে নির্দেশনা দিয়ে বলা হচ্ছে, 'পুরো শরীরে মারেন, মাথায় মাইরেন না।'

কাউকে কাউকে মারধর করতে দেখা গেছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

অন্যদিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় দায়িত্বরত সাংবাদিকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে।

সেখানে হ্যান্ড মাইকে সাংবাদিকদের ছবি না তুলতে এবং ভিডিও না করতে নিষেধ করা হচ্ছে।

ঘটনাস্থল থেকে প্রতিবেদক জানান, 'সাংবাদিকদের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের আশপাশের বাসিন্দাদেরও ছবি-ভিডিও না তুলতে হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে।'

সকাল থেকেই ধানমন্ডি ৩২ এলাকায় গিয়ে ছাত্র-জনতার রোষানলে পড়েন সাংবাদিকরা। কেউ কেউ লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ করেন। 

ধানমন্ডি ৩২ এ ছাত্র-জনতার অবস্থানের ছবি তোলার চেষ্টা করেন প্রতিবেদক। তখন তাঁর কাছ থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে ছবি ডিলিট করতে বাধ্য করা হয়।

আজ ১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে একদল বিপথগামী সেনাসদস্য ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের এই বাড়িতেই বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে সপরিবার হত্যা করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের গত প্রায় ১৫ বছরের শাসনকালে প্রতিবছর ১৫ আগস্ট বহু মানুষ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসতেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।

সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার “জাতীয় শোক দিবস”-এর ছুটি বাতিল করেছে।