পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনতাজ আলীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন। প্রেসক্লাব মিলনায়তন, পাবনা, ৩১ আগস্ট | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি পাবনা: পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনতাজ আলীর বিরুদ্ধে পাঁচজন ইউপি সদস্যকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের মধ্যে ছুরিকাঘাতে আহত ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাহিদ শেখকে (৪০) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে আহত ইউপি সদস্য নাহিদ শেখের বোন রিনা খাতুন পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে তিনজন ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন মালিগাছা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাসুদ রানা, ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মুনছুর আলী ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনজারুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে রিনা খাতুন জানান, ইউনিয়ন পরিষদে ৯ মাস ধরে ওয়ার্ড সদস্যদের সম্মানী ভাতা দেওয়া হয় না। তাঁরা সম্মানী চাইলেই ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনতাজ আলী টালবাহানা করেন। ২৮ আগস্ট বিষয়টি নিয়ে পরিষদে সভা হয়। এ সময় ভাতার প্রসঙ্গ তুললে চেয়ারম্যান রেগে যান। এতে চেয়ারম্যানের সঙ্গে সদস্যদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পাঁচজন ওয়ার্ডের সদস্য সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাঁর লোকজন পাঁচজন সদস্যকে বেদম মারধর ও একজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়। ছুরিকাঘাতে তাঁর ভাই নাহিদ শেখ গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রিনা খাতুনের দাবি, চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনতাজ আলী দুর্নীতিবাজ ও স্বেচ্ছাচারী। তিনি অবৈধ পথে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন। এ জন্য কাউকেই তোয়াক্কা করেন না। কেউ তাঁর কথার বাইরে গেলেই নিজের ক্যাডার বাহিনী দিয়ে মারধর করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁর ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর ও ছুরিকাঘাত করেন। এ ঘটনায় তাঁর বাবা জিন্নাত শেখ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। কিন্তু এখনো মামলায় চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তিনি দ্রুত তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাসুদ রানা বলেন, ৯ জন সদস্যের মধ্যে ৪ জন চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ। চেয়ারম্যান ওই চারজনকে নিয়ে সব কাজ করেন। তিনিসহ বাকি পাঁচজনকে পাত্তা দেন না। প্রতিবাদ করলে হুমকি দেন। ক্যাডার বাহিনী লেলিয়ে দেন। চেয়ারম্যানের অত্যাচারে তাঁরা অতিষ্ঠ।

ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনতাজ আলী তাঁর বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার নামে মামলা হয়েছে জানি। তবে ইউপি সদস্যের ওপর হামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ওরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চলে যাওয়ার পর রাস্তায় কে বা কারা হামলা করেছে, আমার জানা নেই। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, মালিগাছা ইউপির সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় আহত নাহিদের বাবা জিন্নাত শেখ বাদী হয়ে ২৯ আগস্ট মামলা করেছেন। মামলায় চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনতাজ আলীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।