খালের জায়গা দখল করে তৈরি করা ছাপরা ঘরের দরজায় ঝোলানো হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির একটি সাইনবোর্ড। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার রামচন্দ্রপুর খালে, ১৩ আগস্ট | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার রামচন্দ্রপুর খালের উদ্ধার করা জায়গা আবার দখলে নেওয়া হয়েছে। টিনের ছাউনি ও বেড়া দিয়ে সেখানে বানানো হয়েছে দুটি ছাপরা ঘর।
একটি ছাপরা ঘরের দরজায় ঝোলানো হয়েছে বিএনপির সাইনবোর্ড। তাতে লেখা, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, সাতমসজিদ হাউজিং ইউনিট, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড, মোহাম্মদপুর থানা, ঢাকা মহানগর উত্তর।’
দুটি ছাপরা ঘরের পাশাপাশি খালের জায়গায় বাঁশ-কাঠ পুঁতে আরও কিছু অস্থায়ী ঘর তৈরির কাজ চলছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মোহাম্মদপুরের সাতমসজিদ হাউজিং এলাকায় গিয়ে খালের জায়গা দখলের এমন চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পরের দিন বিকেলেই একদল লোক ওই জায়গায় ঘর বানানোর কাজ শুরু করেন। রাতের মধ্যেই বাঁশের অবকাঠামো দিয়ে টিনের ওই ছাপরা ঘর দুটি তৈরি করা হয়।
প্রায় দেড় মাস আগে গত ২৭ জুন রামচন্দ্রপুর খালের বেদখলে থাকা ওই জায়গা উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছিল ঢাকা উত্তর সিটি কর্তৃপক্ষ। সেদিনের অভিযানে আলোচিত সাদিক অ্যাগ্রোর অবৈধ অংশ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি খামারের পেছনে খালের জায়গায় থাকা অবৈধ কিছু টিনের ঘর ও রিকশার গ্যারেজও সেদিন উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
সাতমসজিদ হাউজিংয়ের বাসিন্দা বাবুল খন্দকার বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরের দিন বিকেলে একদল লোক এখানে জড়ো হন। তাঁরা বাঁশ-কাঠ ও টিন এনে ঘর তৈরির কাজ শুরু করেন। রাতের মধ্যেই ঘর তৈরির কাজ শেষ করা হয়।
খালের যে অংশে আগে সাদিক অ্যাগ্রোর খামার ছিল, সেটার ঠিক পেছনের জায়গাতে তৈরি ছাপরা ঘর দুটির একটির দরজায় বিএনপির সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। ঘর দুটি পুরোপুরি খালের জায়গার তৈরি করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদের সময় ওই অংশে কয়েকটি রিকশার গ্যারেজ ছিল। পাশে ছিল কয়েকটি বস্তি ঘর।
স্থানীয় এক নারী বাসিন্দা জানান, ঘর তৈরির পর আজকের আগপর্যন্ত তিনি কাউকে ওই ঘরে দেখেননি। শুধু আজ সকালে কয়েকজন যুবককে সেখানে দেখেছেন। তাঁরা কিছু চেয়ার ঘরের মধ্যে রেখে গেছেন। তবে এরপর সারা দিন ঘরটি তালাবদ্ধই ছিল।
খালের জায়গা অবৈধ দখলে নিয়ে ঘর তৈরি ও তাতে বিএনপির সাইনবোর্ড টাঙানোর বিষয়ে জানতে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মান্নান হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, খালের জায়গা দখল করে ঘর তৈরির বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তিনি ওই ইউনিটের সংশ্লিষ্ট নেতাদের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইবেন। বিএনপি এ ধরনের কোনো অবৈধ দখলদারিকে সমর্থন করে না।