ব্যঙ্গচিত্রে শেখ হাসিনা | অলংকরণ: পদ্মা ট্রিবিউন 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আরেকটি আবেদন দাখিল করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী মো. মেহেদীর বাবা মো. সানাউল্লাহ আজ বৃহস্পতিবার আবেদনটি দাখিল করেন।

আবেদনে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এবং সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে।

আবেদনের অভিযোগ (কমপ্লেইন রেজিস্টারভুক্ত) গ্রহণ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের বিধান অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

এ নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে পরপর দুই দিনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় দাখিল হলো। ছাত্র আন্দোলনে নিহত আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবিরের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম গতকাল বুধবার প্রথম আবেদনটি দাখিল করেন।

আজ সন্ধ্যায় তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক (প্রশাসন) আতাউর রহমান বলেন, মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা মো. সানাউল্লাহ অভিযোগটি করেছেন। বিকেল চারটার দিকে তা গ্রহণ করা হয়েছে। দুটি অভিযোগ একীভূত করে তদন্ত করা হচ্ছে।

আজ দাখিল করা আবেদনে ঘটনার তারিখ ও সময় গত ২০ জুলাই বিকেল পাঁচটা উল্লেখ করা হয়েছে। আর ঘটনাস্থল হিসেবে ডাচ্ বাংলা ব্যাংক মার্কেটের পেছনে, পাইনাদি, হিরাঝিল এলাকা, নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ, চিটাগাং রোড উল্লেখ রয়েছে। আর গতকাল তদন্ত সংস্থায় দাখিল করা আবেদনে ঘটনার স্থান হিসেবে সারা বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ঘটনা সংঘটনের তারিখ হিসেবে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত এবং এই সময়ের মধ্যে আহত হয়ে পরে বিভিন্ন তারিখে নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করা রয়েছে।

যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
আজ দাখিল করা আবেদনে আসামি হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান ও কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য; র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ ও কিছু অসাধু র‌্যাব কর্মকর্তা ও সদস্যের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মী এবং সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগে।

আবেদনে অপরাধের ধরন বিষয়ে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশ্যে ১ থেকে ৯ নম্বর আসামিদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে আন্দোলনকারী ছাত্র মো. মেহেদীকে হত্যা করে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটানো হয়েছে।

মেহেদী মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার বড় রায়পাড়া গ্রামের মো. সানাউল্লাহর সন্তান।