প্রধান শিক্ষক খন্দকার আব্দুর রহিমের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদীতে বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি নাজিম উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ এনে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার সকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাঠে শতাধিক শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভ চলাকালে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাঁরা নানা স্লোগান দেন, পদত্যাগ ও বিচার দাবি করে।

তাঁদের অভিযোগ অনুসারে, উন্নয়ন কাজের নামে ভুয়া ভাউচার বানাতেন প্রতিমাসেই। কোচিং বাবদ জোরপূর্বক টাকা আদায় করতেন। টাকা না দিলে টিসি দেওয়ার ভয় দেখানো হতো। এ ছাড়া সিনিয়র শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়মিত বাজে আচরণ এবং ইনক্রিমেন্ট ও স্কেল বাড়ানোর নাম করে জোরপূর্বক টাকা হাতিয়েছেন। এছাড়াও রহিম স্যার কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হুমকি দিয়েছেন।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আতিফ হাসান বলেন, ‘নানাবিধ ফি’য়ের নামে নিয়মিত আমাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হতো। কোচিং করতে বাধ্য করতেন আমাদের প্রধান শিক্ষক। কোচিং না করলে টিসি দেওয়ার হুমকি দিতেন।’

ঝুমুর খাতুন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের দাবি না মানলে আমরা শিক্ষা অফিস ঘেরাও করবো।’ 

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সূফী নূর মোহাম্মদ বলেন, 'আমরা বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাতে মনে হয়েছে তাঁরা কারও ইন্ধনে এ বিক্ষোভ করছে। তাঁদের অভিযোগ এবং দাবীগুলোও খুব একটা যৌক্তিক মনে হয়নি। তারপরও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

এ বিষয়ে জানতে জানলে প্রধান শিক্ষক খন্দকার আব্দুর রহিম বলেন, আমার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা যে-সকল অভিযোগ নিয়ে এসেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিগত সময়ের আক্রোশ ও আমার চেয়ারে বসার জন্য বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আলামীন ও মাতৃভাষা শিক্ষক মনোয়ার শেখ শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে এ বিক্ষোভের আয়োজন করেছে। তারা ছাত্রদের দিয়ে বিদ্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়েছে যেন আমি বিদ্যালয়ে আসতে না পারি। আমি এমন অযৌক্তিক বিক্ষোভের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

শিক্ষক রুহুল আলামীন ও মনোয়ার শেখ মুঠোফোনে এ অভিযোগ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবী করে বলেন, 'প্রধান শিক্ষক বিগত সময় নানা দূর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বৈরচারী আচরন করেছে। তাই শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ কর্মসূচী করছে। আমরা তাদের সব সময় সতর্ক করেছি কোনপ্রকার অস্থিরতা যেন সৃষ্টি না হয়।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ বলেন, ‘শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।’