আনসার বাহিনীর ৩৯০ জন কারাগারে

গ্রেপ্তার আনসার সদস্যদের আদালতে নেওয়া হচ্ছে। সিএমএম কোর্ট | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: পৃথক চারটি মামলায় গ্রেপ্তার আনসার বাহিনীর ৩৯০ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

এর আগে রাজধানীর শাহবাগ, রমনা, পল্টন ও বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা পৃথক চারটি মামলায় আনসার সদস্যদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকার আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাঁদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। অপর দিকে আনসার সদস্যদের পক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়।। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের প্রত্যেককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাঁদের আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় ১৯১ আনসার সদস্য, রমনা থানার মামলায় ৯৮, পল্টন থানার মামলায় ৯৫ ও বিমানবন্দর থানার মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, ৮ থেকে ১০ হাজার আনসার সদস্য অনুমতি না নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। একই সঙ্গে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথা অমান্য করে কর্মসূচি প্রত্যাহার না করে সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা–কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করেন। সচিবালয়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে সরকারি কাজে বাধা দেন। একই সঙ্গে আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে সচিবালয়ে গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।

পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, আসামিরা বেআইনি সমাবেশ করেছেন। লাঠিসোঁটা নিয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি ও সচিবালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছেন।

চার মামলায় আনসার বাহিনীর ৩৯০ জনকে কারাগারে পাঠানো হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজেদের চাকরি জাতীয়করণসহ কয়েকটি দাবিতে আনসার সদস্যরা কয়েক দিন ধরে ঢাকায় বিক্ষোভ করছিলেন। গতকাল রোববার তাঁরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সচিবালয় ঘেরাও করে রাখেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানান। ঘেরাও করে রাখায় সচিবালয় থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারছিলেন না। দিনভর রাজধানীতে ছিল ব্যাপক যানজট।

সচিবালয়ে আনসার সদস্যরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহসহ অনেককে আটকে রেখেছেন, রাতে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। আনসার সদস্যদের প্রতিহত করতে তাঁরা মিছিল নিয়ে সচিবালয় এলাকায় যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে হাসনাত আবদুল্লাহসহ অন্তত ৪০ শিক্ষার্থী আহত হন। এ সময় কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন। আসিফ হাওলাদার নামে এক সাংবাদিক আহত হন।

এর আগে গতকাল বিকেলেই আনসারদের দাবি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় আনসার সদস্যদের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু বিকেল পাঁচটার দিকে আনসার সদস্যরা সচিবালয়ের ভেতরে কর্মকর্তাদের জিম্মি করে তাঁদের চাকরি জাতীয়করণ করতে চাপ দেন।