ভর দুপুরে আকাশ আঁধার করে নামে বৃষ্টি, ছাতা হাতে হাতিরঝিলে বৃষ্টি উপভোগ করতে দেখা যায় এক তরুণীকে |ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: শরতের শুরুতে মেঘলা আকাশ। কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে, কোথাও ছিটেফোটা। সোমবার সকালে রাজধানীতে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। আগের দিনও ঝরেছে এমন বৃষ্টি। থেমে থেমে সারাদেশে এ রকম বৃষ্টি চলবে মাসজুড়ে। কম-বেশি প্রায় প্রত্যেক দিন বৃষ্টি হবে। এমন বার্তা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।   

আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম সোমবার সকালে বলেন, আগামী ৮ থেকে ১০ দিন বৃষ্টি চলতে পারে। দুই-এক দিন পরে একটু কমবে। কিছুটা বিরতি দিয়ে আবার হালকা পরিমাণ বাড়বে। এভাবে মাসজুড়ে চলবে।

এখন দক্ষিণাঞ্চলের তিন বিভাগে বৃষ্টি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর প্রভাব কিছুটা ঢাকা ও সিলেটে আছে।

শাহিনুল ইসলাম বলেন, রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহে বৃষ্টি চলছে, তবে পরিমাণে কম। দুই-এক দিন পর সেখানে আবার বৃষ্টি বাড়তে পারে।

পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও আশেপাশের গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। এর প্রভাবে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে সাগরের সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে প্রচুর মেঘ তৈরি হয়েছে। মাসের বাকি সময়জুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টি থাকতে পারে।

এদিকে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পায়রা ও মোংলা বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে উপকূলের কাছে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

দেশে সোমবার সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ১৯৬ মিলিমিটার। বান্দরবানে ১৪৩ মিলিমিটার, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ১৩৪ মিলিমিটার, কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় ১২৫ মিলিমিটার, ফেনীতে ১১৩ মিলিমিটার, লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ১০৫ মিলিমিটার, চট্টগ্রামে ৯৯ মিলিমিটার, আমবাগানে ৯৯ মিলিমিটার, নোয়াখালীর মাইজদী কোর্টে ৯৮ মিলিমিটার, চট্টগ্রামের হাতিয়ায় ৭৮ মিলিমিটার, টেকনাফে ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, খুলনার কয়রা, চাঁদপুর, কুমিল্লা, সিলেট, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, সিরাজগঞ্জের তাড়াশসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকার আকাশে মেঘের আনাগোনা থাকলেও গতকাল এখানে বৃষ্টি হয়েছে হালকা বৃষ্টি হয়েছে, যার পরিমাণ এক মিলিমিটার।

রংপুর, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগে গতকাল বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম ছিল, কোনো কোনো বিভাগে ছিলও না। এতে এসব বিভাগে তাপমাত্রা কিছুটা বেশি ছিল। শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুর, নীলফামারীর সৈয়দপুর ও ডিমলা, চুয়াডাঙ্গায় গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাঙামাটিতে ২৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ সোমবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আগামীকাল মঙ্গলবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।