শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিক্ষোভ সমাবেশ করে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিবেদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করে তাঁর বিচার করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের দাবি, সেই মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদেরও আসামি করতে হবে।

আজ সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক বিক্ষোভ সমাবেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়। ‘ক্যাম্পাসে দখলদারত্বের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ এবং শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে’ এ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল তারা।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে যারা তাঁর সহযোগী ছিল, তাদের এবং তাঁর ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের আসামি করে মামলা করতে হবে।’

হাসনাত বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনকে সর্বজনীন করার জন্য গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। স্বৈরাচারকে উৎখাত করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, কিছু কিছু গণমাধ্যম খুনিদের পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এটাই আমাদের মূল দাবি।’

এ সময় নাম উল্লেখ না করে অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টার সমালোচনা করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা অনেক উপদেষ্টাকে দেখছি খুনিদের পুনর্বাসন করার বক্তব্য দিতে। আমরা উপদেষ্টাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আপনি উপদেষ্টা হয়েছেন। সুতরাং যখন কোনো বক্তব্য দেবেন, আপনার সামনে যেন ৫ আগস্টের গণভবনের চিত্রটা মাথায় থাকে।’

আমলাতন্ত্রের বিভিন্ন পর্যায়ে কিছু ‘স্বৈরাচার’ অভ্যুত্থান করার চিন্তা করছে বলে সমাবেশে অভিযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা জানিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা যখন এক হয়েছে, তখন আপনাদের এসব ক্যু (অভ্যুত্থান) লেজ গুটিয়ে পালাবে।’

ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেনও সমাবেশে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালালেও দেশে এখনো স্বৈরাচার রয়ে গেছে। সারা দেশে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা যে অপকর্ম চালাচ্ছে, ছাত্রসমাজ সেসব অপকর্ম শক্ত হাতে দমন করবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হতে পারে। ছাত্রসমাজ তাদের নিরাপত্তায় বুক পেতে দেবে। ১৫ আগস্ট সামনে রেখে যারা ষড়যন্ত্র করছে, আমরা তাদের ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই সফল হতে দেব না। আমরা মাসের পর মাস রাজপথে থাকব, তবু আমাদের বিপ্লবকে ব্যর্থ হতে দেব না।’

সমাবেশ শেষে রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিপুল শিক্ষার্থীর মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়।