ছবিতে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চরিত্রে ছিলেন হেলাল খান, খালেদা জিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিপুণ আক্তার | কোলাজ
বিনোদন প্রতিবেদক: এক দশক আগে ‘আপসহীন’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেছিলেন গীতিকার, প্রযোজক ও পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বায়োপিক হিসেবে এটি তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু কয়েক দিন শুটিংয়ের পর ছবিটির আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। কয়েক দিন আগে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর হঠাৎ প্রকাশ্যে আসে খালেদা জিয়ার সেই বায়োপিক মুক্তির খবর। আজ শনিবার সন্ধ্যায় ছবিটির প্রধান চরিত্রের অভিনয়শিল্পী ও প্রযোজক হেলাল খান জানালেন, খালেদা জিয়ার বায়োপিক মুক্তির খবরটি একেবারে ভিত্তিহীন।
২০১৩ সালে ‘আপসহীন’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বায়োপিক এটি, পারিপার্শ্বিক কারণে তখন এই তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ছবিতে খালেদা জিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিপুণ আক্তার, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চরিত্রে ছিলেন হেলাল খান। শনিবার হেলাল খান বললেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বায়োপিক “আপসহীন” ছবির মুক্তির খবরটি কয়েকটি অনলাইন, ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন ও দুরভিসন্ধিমূলক। এমনকি এই ছবির শুটিংই তো শেষ হয়নি।’
কথা প্রসঙ্গে হেলাল খান জানালেন, ‘শুটিংয়ের সময়ের কথা খুব একটা মনেও নেই। তবে যত দূর মনে পড়ে, ওই সময় এফডিসিতে ৫-৭ দিন আমরা শুটিং করেছিলাম। তারপর পুরো কাজটা বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ করে শুনলাম, “আপসহীন” মুক্তি পাচ্ছে! আচমকা এমন খবরে আমি তো অবাক, একই সঙ্গে বিব্রতও হয়েছি।’
‘আপসহীন’ প্রসঙ্গে হেলাল খান বলেন, ‘বায়োপিক নির্মাণ নিয়ে ২০১৩ সালে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গাজী মাজহারুল আনোয়ার ভাই ও আমি পরিকল্পনা করেছিলাম। তখন কিছু শুটিংও করা হয়েছিল। ওই সময় রাজনৈতিক মামলায় আমি গ্রেপ্তার হই। ফলে বয়োপিক নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায়, এরপর আর কখনো কোনো শুটিং হয়নি। ২০১৩ সালের পর ২০১৪ সালের নির্বাচন এবং পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক পটভূমিতে অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা প্রদান করা হয়। চিকিৎসাসেবাও বাধাগ্রস্ত করা হয়। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে বায়োপিক নির্মাণের কাজ তখন থেকেই বন্ধ ছিল। এরই মধ্যে কয়েকটি গণমাধ্যমে এসেছে, “আপসহীন” বায়োপিকটি নির্মিত হয়েছে। যদি এমনটাই হতো, তাহলে তো ওই সময় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি থেকে নিবন্ধন করা হতো, যা কখনোই করা হয়নি। এদিকে ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা যান।
এসব পটপরিবর্তনের কারণে আর কখনো বায়েপিক নির্মাণের বিষয়ে আমি চিন্তাভাবনা করিনি। কাজেই বায়োপিক মুক্তির বিষয়টি মিথ্যা, গুজব, ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমূলক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
বিষয়টি নিয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যায় কথা হয় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ছেলে সরফরাজ আনোয়ারের সঙ্গে। তিনিও বললেন, ‘২০১৩ সালে শুনেছিলাম “আপসহীন” নামে একটি বায়োপিক হচ্ছে, যা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জীবনী নিয়ে।
এরপর
কয়েক দিন শুটিং হয়ে নানা প্রতিকূলতায় তা থেমে যায়। তারপর কিন্তু আর কোনো
খবর ছিল না। হঠাৎ করে পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি, “আপসহীন” মুক্তি
পাচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, যে ছবির শুটিংই শেষ হয়নি, তা মুক্তি পায় কেমন করে!
তা ছাড়া আমার সঙ্গে এ বিষয়ে কারও সঙ্গে কোনো কথা হয়নি।’
সরফরাজ আরও
বলেন, ‘মুক্তি নিয়ে যে কথা হচ্ছে, এই ব্যাপারেও আমার কারও সঙ্গেই কোনো কথা
হয়নি। এই ছবি মুক্তি দেওয়ার কোনো পরিকল্পনাও আমাদের নেই, আমার বক্তব্য
অন্যায়ভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে। এই ছবির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা
নেই।’
‘অপোসহীন’ ছবিতে খালেদা জিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেন চিত্রনায়িকা নিপুণ।