ভারতে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাফনের কাপড় পড়ে প্রতিবাদী পথনাটক করে শিক্ষার্থীরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে রাজপথে নেমে আসা ভারতীয়দের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। প্যারিস রোডে শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘গণসংহতি ও মোমবাতি প্রজ্বালন’ কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা।
এ সময় ওই নারী চিকিৎসকের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। মোমবাতি হাতে শিক্ষার্থীরা ‘জাস্টিস ফর জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, নো মোর রেপিস্ট’– স্লোগান দেয়। এ ছাড়া ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি পথনাটকের আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মোহাম্মদ মেশকাত চৌধুরী বলেন, ‘পৃথিবীর যে প্রান্তেই বৈষম্য, অবিচার, স্বৈরাচার দেখা দেবে, সে দেশের মানুষের ন্যায়সংগত অধিকার রক্ষায় আমাদের রাজপথে দাঁড়াতে হবে। এই সংস্কৃতি যত দিন না নিজেদের মধ্যে তৈরি করতে পারব, তত দিন পৃথিবী থেকে অন্যায় দূর হবে না। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক থাকবে, জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক থাকবে, কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক থাকতে পারে না।’
আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী সানজিদা ঢালী বলেন, ‘কর্মস্থলকে আমরা নিরাপদ আবাসস্থল মনে করি। সেই জায়গায় ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ করা হয়েছে। এই ধরনের অন্যায়, অত্যাচার আমরা মেনে নেব না। রাজপথে থেকে ভারতের আন্দোলনকারীদের সর্বাত্মক সমর্থন দেওয়া হবে।’
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। ওই নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাকে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ও মানবসমাজের জন্য অপমানের বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের রক্তের দাগ এখনো মেশেনি। ঠিক সেই সময়ে পাশের দেশ ভারতের ঘটনা সবার বিবেককে নাড়া দিয়েছে। ওই নারী চিকিৎসককে যেভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে, সেটি পুরো মানবসমাজের জন্য অপমানের ও বর্বরোচিত। শুধু ভারত নয়, দেশেও নারীরা নিরাপদ নন। পৃথিবীর প্রতিটি জায়গায় ঘরে-বাইরে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে পুরুষেরা যেমন নিরাপদ বোধ করেন, নারীরাও যেন তেমন নিরাপদ বোধ করেন, তিনি সে আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে গত শুক্রবার আর জি কর মেডিকেল কলেজে ৩১ বছর বয়সী ওই চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ‘রাত দখল নাও’ ব্যানারে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া বেশির ভাগই নারী।