সাংবাদিক দম্পতি শাকিল ও রুপাকে গ্রেপ্তারে আরএসএফ-সিপিজের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপাকে গ্রেপ্তার করার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা দুই বৈশ্বিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) ও কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে)। গতকাল বৃহস্পতিবার সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি তাঁদের মুক্তি দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে আরএসএফের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাংবাদিক ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদ, যিনি রুপার স্বামী, নিজেদের কাজের জন্য প্রতিহিংসার শিকার হওয়ার আশঙ্কা থেকে ফ্রান্সে উদ্দেশে যাত্রা করার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় ২১ আগস্ট ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে তাঁদের আটকে দেন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। তাঁরা দুজনই বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভিতে কাজ করতেন। এই টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রতি ক্ষমতাচ্যুত হওয়া শেখ হাসিনা সরকারকে সমর্থন করেছিল। ফারজানা রুপা ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল ফ্রান্স ২৪–এ ও কাজ করেছেন।

গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা পর ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদকে ঢাকার একটি থানায় হস্তান্তর করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে ‘সহিংসতায় উসকানি’সহ গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই মামলায় গতকাল আদালত তাঁদের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

আরএসএফ বলেছে, বাংলাদেশে সম্প্রতি সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের ওপর যে সহিংসতা ও বৈরিতা দেখা দিয়েছে এর মধ্যে ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর এই দুই সাংবাদিকের ওপরই প্রথম বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের সুরক্ষা এবং তাঁদের বিষয়ে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে আরএসএফ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

বিশেষ করে ফারজানা রুপার সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে আরএসএফ। তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে দেশত্যাগ করতে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আরএসএফের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকাকালে ফারজানা রুপার সুরক্ষা ও সুষ্ঠু বিচারের বিষয়টি নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি আমরা।’

এদিকে সাংবাদিক দম্পতি শাকিল ও রুপার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে সিপিজের এক টুইটে বলা হয়েছে, ‘তাঁদের সুরক্ষা ও আইনি অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আর সাংবাদিকতার জন্য কোনো সাংবাদিককে যদি গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে আনীত অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি আমরা।’

সিপিজে জানিয়েছে, গত বুধবার ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দন থেকে এই সাংবাদিক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁদের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পরদিন গতকাল ফজলুল করিম নামের একজন সরকারি কর্মচারী হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তাঁদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।