কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প | ফাইল ছবি |
নিজস্ব প্রতিবেদক: কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেটের সব কটি আজ রোববার সকাল আটটায় খুলে দেওয়া হয়েছে। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়।
কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবস্থাপক এ টি এম আবদুজ্জাহের বলেছেন, এর মাধ্যমে ৯ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। এতে করে কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই বলেছেন তিনি।
কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট পর্যন্ত বলে জানান প্রকৌশলী আব্দুর জাহের। তিনি আজ সকালে বলেন, এর বেশি পানি রাখা সম্ভব হয় না। তাতে করে অন্য এলাকায় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই ৬ ইঞ্চি পরিমাণ পানি অর্থাৎ ৯ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। এদিকটায় পানি ১০৯ ফুটের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।
সব কটি গেট খুলে দেওয়ায় পার্বত্য এলাকার নতুন কোনো অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে আব্দুর জাহের বলেন, নতুন কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। এর আগে এর চেয়ে বেশি পরিমাণ পানি ছাড়া হয়েছে। এখন যদি পানি না ছাড়া হতো তবে বাঘাইছড়ি উপজেলার সবকিছু ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থাকত।
স্থানীয় ও কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সূত্রে জানা গেছে, টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলের পানি নামতে শুরু করায় কাপ্তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েই যাচ্ছে। গত ৫ দিনে হ্রদের অন্তত ৯ ফুট পানি বেড়েছে। এ কারণে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে।
বৃষ্টি কমে আসায় দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অনেক জায়গায় পানি নামতে শুরু করেছে। তবে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লার অনেক উপজেলায় পরিস্থিতি এখনো খারাপ। এর মধ্যে ফেনীর গ্রামাঞ্চলে অন্তত এক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে আটকে আছেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ফেনীর বন্যাকবলিত এলাকায় মুঠোফোন নেটওয়ার্ক ভালোভাবে কাজ করছিল না। ফলে সেখানকার প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণাও পাওয়া যায়নি। সরকারি হিসাবে, বন্যাকবলিত এলাকায় পানিবন্দী প্রায় ১০ লাখ পরিবার।
বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে শুকনা খাবার ও সুপেয় পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। অনেক জায়গায় স্বেচ্ছাসেবীরা ত্রাণ নিয়ে পৌঁছাতে পারছেন না।
সরকারি হিসাবে, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্যায় দেশে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৫ জন, কুমিল্লায় ৪, নোয়াখালীতে ৩, কক্সবাজারে ৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, ফেনীতে ১ ও লক্ষ্মীপুরে ১ জন মারা গেছেন।