শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের | ফাইল ছবি |
প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মো. শিমুল (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া এতে আসামি করা হয়েছে তিন সাংবাদিককেও। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বগুড়া সদর থানায় ১৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন শিমুলের স্ত্রী শিমু বেগম। আর এতে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৪০০ জনকে।
ওই সাংবাদিকেরা হলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার মাহমুদুল আলম, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের উত্তরাঞ্চল ব্যুরোপ্রধান হাসিবুর রহমান, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের বগুড়া প্রতিনিধি জে এম রউফ। তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যা ছাড়াও ককটেল ও পেট্রলবোমা হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমান, বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান প্রমুখ। এ নিয়ে বগুড়ায় গত ১১ দিনে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যা মামলা হয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বগুড়া শহরের প্রধান সড়কে ঝাউতলা এলাকায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে এবং সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমান, রাগেবুল আহসানসহ চারজনের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা পিস্তল, কাটারাইফেলসহ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা চালান। এ সময় ছাত্র-জনতার মিছিলে ককটেল ও পেট্রলবোমা হামলা করেন ওই তিন সাংবাদিকসহ এজাহারভুক্ত ৩৩ জন।
মামলার অভিযোগ আরও বলা হয়েছে, হামলার সময় শিমুল ছাত্র-জনতাকে রক্ষা করতে এগিয়ে যান। এ সময় তাঁকে লক্ষ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়েন বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি টি জামান, বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর আরিফুর রহমান, আবদুল মতিন সরকারসহ অন্য আসামিরা। বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে শিমুল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত হলে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে শিমুলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলার বিষয়ে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, ১৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলাটি করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়।
এর
আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গাবতলী পৌর শ্রমিক দলের সহসভাপতি জিল্লুর
সরদার নিহত হওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৫৫৭ জনের বিরুদ্ধে ২৫ আগস্ট বগুড়া সদর
থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।