সিরাজগঞ্জ জেলার মানচিত্র

প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ পৌর শহরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ডাকা অসহযোগ আন্দোলনকে ঘিরে আজ রোববার এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিরা হলেন সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মাছুমপুর মহল্লার মাজেদ আলীর ছেলে রঞ্জু মিয়া (৪০), পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গয়লা মহল্লার আসু মুন্সীর ছেলে আবদুল লতিফ (২৬) ও একই মহল্লার গঞ্জের আলীর ছেলে মো. সুমন (২২)।

এদিকে সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত ও বর্তমান জাতীয় সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর বাড়িসহ সরকারি–বেসরকারি স্থাপনার বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ সকাল ১০টা থেকে পৌর শহরের বাজার স্টেশন গোলচত্বর এলাকায় জড়ো হতে থাকেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এদিকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে ছাত্রলীগের একটি মিছিল শহরের খেদন সর্দার মোড় হয়ে দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার সময় স্টেশন সড়ক থেকে শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল আসে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা পিছু হটলে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে শহরের এস এস সড়কে ঢুকে পড়েন। এ সময় শহরের বিভিন্ন সড়কের পাশে থাকা কিছু দোকানপাট ও বাড়িতে ভাঙচুর চালান।

একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত ও বর্তমান জাতীয় সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর বাড়ি, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, উপজেলা ভূমি কার্যালয় ও মুক্তা প্লাজা নামে একটি বাণিজ্যিক ভবনে কিছু দোকান ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া জেলা স্কাউট ভবন, শহীদ এম মনসুর আলী মিলনায়তন ও কিছু দোকানে ভাঙচুর করেন তাঁরা।

এ ছাড়া বেলকুচি, শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়ায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, থানা ও সংসদ সদস্যদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তাকে ফোন দিয়েও তাঁদের পাওয়া যায়নি।

সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহরিয়ার সিপু বলেন, সিরাজগঞ্জ পৌর শহরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষের সময় রঞ্জু মিয়া আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছিলেন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে তিনি আহত হয়ে শহরের টুকু সেতু এলাকায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হওয়ায় তাঁকে আর হাসপাতালে নেওয়া হয়নি।

পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাজউদ্দিন বলেন, ‘আজ দুপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে শহরে গিয়ে সংঘর্ষে আমার এলাকার গয়লা মহল্লার আবদুল লতিফ ও সুমন নামে দুজনের মৃত্যু বিষয়টি জানতে পেরেছি। শুনেছি, এরা দুজনই সংঘর্ষের সময় শহরের বড় পুল থেকে চৌরাস্তা এলাকার যেকোনো একটি স্থানে আহত হয়ে মারা যান।’