হামলা–অগ্নিসংযোগের পর নরসিংদী কারাগার যেন ধ্বংসস্তূপ। গত মঙ্গলবার তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

প্রতিনিধি নরসিংদী: নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া আরও ১২২ জন বন্দী আজ বৃহস্পতিবার আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ করা বন্দীর এই সংখ্যা নিশ্চিত করেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম।

এ নিয়ে গত ৪ দিনে ৮২৬ বন্দীর মধ্যে ৪৬৮ জন বন্দী আইনের আওতায় এলেন। তাঁদের মধ্যে ৪৩৯ জন জেলা আইনজীবী সমিতির মাধ্যমে ও বাকিরা বিভিন্ন থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন বা থানা-পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

কারারক্ষীরা বলেন, গত শুক্রবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে নরসিংদী কারাগারে আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা মুহুর্মুহু ইটপাটকেল ছুড়ে হামলা চালান। ওই সময় কারাগারের ভেতরে পেট্রল বোমা মেরে বন্দীদের থাকার জায়গাসহ বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে কারারক্ষীদের কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে ভেতরে ঢুকে বন্দীদের অনেক কক্ষের তালা খুলে দেওয়া হয়। কিছু কক্ষের তালা ভেঙে ফেলা হয়। চারপাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে গেলে বন্দী ৮২৬ জনই কারাগার থেকে পালিয়ে যান। এর আগে অস্ত্রাগার ও কারারক্ষীদের কাছ থেকে ৮৫টি অস্ত্র ও ৮ হাজার ১৫০টি গুলি লুট করা হয়।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম জানান, কারাগার থেকে সব বন্দী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার পরই অনেকে আত্মসমর্পণের চেষ্টা করছিলেন। কারণ, অনেক বন্দীই তখন পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন এসব বন্দীর স্বজনেরা। তাঁদের আইনজীবী সমিতিতে যোগাযোগ করতে বলা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার ৫ জন, মঙ্গলবার ১৩৮ জন, বুধবার ১৫৫ জন ও আজ ১২২ জন বন্দী আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত সাড়ে চার শতাধিক বন্দী আত্মসমর্পণ করেছেন। যাঁরা আত্মসমর্পণ করবেন না, তাঁরা যেখানেই পালিয়ে থাকুন না কেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান আরও জানান, কারাগার কর্তৃপক্ষের দুটি মামলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনায় করা ১০ মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এসব মামলায় মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা ১২৯। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর ও কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।