রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ করা হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে প্রশাসনকে এক ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা দিয়ে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লিখিতভাবে পাঁচ দফা দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। বেলা দুইটার মধ্যে এসব দাবির ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে দাবি জানান তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা দীর্ঘ আলোচনা শেষে বেলা আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তাঁদের সিদ্ধান্ত জানান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়েন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাঁদের পাঁচ দফা দাবির একটিও প্রশাসন মেনে নেয়নি। এ জন্য প্রশাসনকে নতুন করে আরও এক ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের প্রশাসন ভবনে রেখে গেটে তালা দেন আন্দোলনকারীরা। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন তাঁরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি মধ্যে আছে—১. ক্যাম্পাসে আজীবন সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা। এ জন্য লিখিতভাবে প্রভোস্টদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা। ক্যাম্পাসে কোনো সন্ত্রাসী যাতে ঢুকতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করা। বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্টকে পদত্যাগ করতে হবে।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা দেওয়া। সেখানে শিকল গলায় আন্দোলনকারী একজন বসে আছেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
২. হল খালি করার করার নির্দেশ ও ক্যাম্পাস ছুটির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। মেসমালিকদের চিঠি দিয়ে মেসগুলো খোলা রাখতে হবে ও হলের সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে প্রভোস্টকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সিট বরাদ্দ দিতে হবে।
৩. চলমান আন্দোলন নিয়ে যাতে কোনো মামলা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. প্রশাসনিকভাবে মিডিয়ার উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে ক্যাম্পাস অস্ত্রমুক্ত করতে হবে।
৫. ছাত্রলীগের দখল করা কক্ষগুলো গণরুমে পরিণত করতে হবে।
এদিকে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের মধ্যে ১০ জন
প্রতিনিধিকে নিয়ে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা সভা শুরু করেছেন। এ সময়
ক্যাম্পাসের তিনটি সাংবাদিক সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কয়েকটি
বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদকর্মীকে সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সভা চলছিল। আর প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে
শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছিলেন।