ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিবেদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গায়েবানা জানাজা কর্মসূচির পর কফিনমিছিল শুরু করেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
আজ বিকেল সোয়া চারটার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মিছিলটি লক্ষ্য করে একের পর এক সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ভিসির বাসভবন ও আশপাশের নিরাপত্তার স্বার্থে ভিসির অনুমতিক্রমে মিছিল ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গায়েবানা জানাজা শেষে তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল শুরু করেন। সেখানে পুলিশ হামলা চালায়।
এর আগে বিকেল চারটার দিকে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ফুলার রোড দিয়ে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আসেন। সেখানে আগে থেকে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার দেশের ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের জন্য এই গায়েবানা জানাজা ও কফিনমিছিলের কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। যদিও কর্মসূচিটির নির্ধারিত স্থান ছিল রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে; তবে সেখানে পুলিশের বাধায় তা পালন করতে পারেননি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এর আগে ঘটনাস্থল থেকে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন ও আরও একজনকে আটক করে পুলিশ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, নির্ধারিত সময়ের কিছুক্ষণ আগেই আখতার হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন। কিন্তু টিএসসি এলাকায় যাওয়ার প্রতিটি প্রবেশপথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য অবস্থান নেন।
সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আখতার হোসেনসহ আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীর কথা-কাটাকাটি হয়। পুলিশ আখতার হোসেনকে আটকের চেষ্টা করে।
এ সময় সেখানে থাকা সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে যান। কিন্তু পুলিশ সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের দিকে দুটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। দুটি ফাঁকা সাউন্ড গ্রেনেডও ছোড়া হয়। এ সময় চ্যানেল এসের সাংবাদিক সোলেয়মান আহত হন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এরপর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি পালন করা হয়।
এর আগে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র ও জনতার ব্যানারে গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন নিখিলসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। জানাজার পর ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা সেখানেই অবস্থান করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ থেকে বের হওয়ার সময় তাঁদের মুঠোফোন তল্লাশি করা এবং মারধর করতেও দেখা গেছে। বেলা তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার মধ্যে অন্তত তিনজনকে মারধর করা হয়। তাঁদের দুজনকে পুলিশ রক্ষা করে। একজন দৌড়ে শাহবাগ থানার মধ্যে ঢুকে যান।